শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জে মসজিদ কমিটির লোকজনের উপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হাওরের খাল ও বাঁধ দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের পাগলা পশ্চিম পাড়া ব্রাহ্মণগাঁও মৌজার দলার হাওরের খাল ও বাঁধ নামক স্থানে।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিন খাই হাওরের ধলার হাওরে অংশে গিয়ে দেখা যায়, দলার হাওর ও খাল ও বাঁধ নামক স্থানে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে এবং এই এলাকার কৃষকের কৃষিকাজে কোন ধরনের পানির সমস্যা হচ্ছে না।
এ সময় স্থানীয় কৃষক ব্রাহ্মণগাঁও জামে মসজিদের সাধারণ স¤পাদক আইয়ুব উদ্দিন ও যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক আফিজুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম মুলুক, কাচাই মিয়া, সদস্য শাহজাহান মিয়া, শওকত আলী, জাবেদ নুর জানান, এ হাওরে আমাদের জমি বেশি রয়েছে। বিগত ৪০ বছর যাবৎ আমরা এই হাওরের পানি রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে পল্লার (খাল) কাড়া নামক স্থানটি ভরা বর্ষা মৌসুমে চিংড়ি মাছ আহরণের জন্য লিজ দেই এবং পল্লাটি ভেসে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা বেঁধে রাখি এবং এই জায়গায় একজন পাহারাদার নিয়োগ করে রাখি, যাতে কেউ এই কাড়া কেটে দিয়ে পানি নামাতে না পারে। তারা আরও জানান, আমরা কমিটির পক্ষ থেকে প্রতি বছর স¤পূর্ণ বাঁধে মাটি কাটাই পাহারাদারের বেতন দেই। আমাদের গ্রামের কৃষকের আমাদের জমিতে পানি রাখার স্বার্থে এবং হাওরে পানি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করি। এই হাওরে আমাদের জমিই বেশি। চতুর্দিকে কৃষকগণ বোরো জমি চাষ করার পরও এখন পর্যন্ত হাওরে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। কিন্তু আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কিছু লোককে সাথে নিয়ে হাওরে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে বলে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা কুৎসা রটাচ্ছেন- দলার হাওরের পল্লার কাড়াটি নিজের লোকদের দিয়ে দখলে নেওয়ার জন্য।
কৃষক সহিবুল ইসলাম জানান, আমাদের এই হাওরে প্রচুর পরিমাণ পানি রয়েছে। অতিরিক্ত পানির কারণে কিছু বোরো জমি এখনও পানির নিচে রয়েছে। কৃষি কাজে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার জানান, নির্বাচনী রেশ বলতে কিছুই নেই। দলার হাওরের পূর্ব পাশের বানী বিল নামক জায়গা শুকানোর কারণে কৃষকের বোরো জমি চাষ করতে পানির স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
ব্রাহ্মণগাঁও জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক আফিজুল ইসলাম বলেন, দলার হাওরের পূর্ব পাশে বানী বিল নামক স্থানে একটি বাঁধ রয়েছে। যা বেঁধে রাখার দায়িত্ব শত্রুমর্দন গ্রামবাসীর। বানী বিলের সাথে আমাদের পল্লার কাড়ার কোন স¤পর্ক নেই। আমাদের পল্লার কাড়া অক্ষত রয়েছে। হাওরে পানিও পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার উজ জামান জানান, যদি অভিযোগকারী মসজিদ কমিটির লোকজনের উপর মিথ্যা হয়রানিমূলক কোন কিছু করে থাকে তাহলে আমি খতিয়ে দেখব।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ বলেন, দলার হাওরের পশ্চিমের অংশে যে পল্লার কাড়া রয়েছে সেটা বিগত ৫০ বছর যাবৎ ব্রাহ্মণগাঁও জামে মসজিদ কমিটির লোকজন রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন তা আমার জানা আছে। এবং এই জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিও রয়েছে। বর্তমান বোরো মৌসুমে উপজেলার প্রত্যেকটি হাওরে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে, শুধু এই হাওরে নয়। একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য মসজিদ কমিটির লোকদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।