1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিভেদ ভুলে জাতীয় পার্টিতে ঐক্যের সুর

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতীয় পার্টিতে নেতৃত্ব নিয়ে টানা কয়েক মাসের বিরোধের পর দলে ‘ঐক্য প্রক্রিয়া’ শুরু হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যৌথভাবে উদযাপন করতে যাচ্ছে বিবদমান দুটি পক্ষ। এ জন্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দাওয়াত নিয়ে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের রোববার রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায় গিয়েছিলেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা রোববার দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। এ ছাড়া আগামী ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ওনাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। উনি বলেছেন, উনি আসবেন।
জাতীয় পার্টির এক রওশনপন্থি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রোববার দলের শীর্ষ নেতা ও চেয়ারম্যান জি এম কাদের রওশন এরশাদকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দাওয়াত দিয়েছেন। দুই অংশ (রওশন ও জি এম কাদের) এক সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবেন বলে আলোচনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, দলের ঐক্য প্রক্রিয়া তৈরিতে বেশ কিছু কার্যক্রম নিয়ে রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে।
দলের মধ্যে রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরপন্থিদের এই বিরোধের সূত্রপাত হয় গত ৩১ অক্টোবর। সে দিন দলের কাউন্সিল ডেকে চিঠি দেন রওশন। কিন্তু জি এম কাদেরপন্থিরা বলেন, তিনি দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে সেটা করতে পারেন না। নেতৃত্ব নিয়ে সেই বিরোধ বর্তমানেও চলমান রয়েছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এবং দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এ সময় রওশন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির কাদেরপন্থি কয়েকজন নেতা জানান, দল থেকে বহিষ্কৃত সব নেতাকে দলে ফিরিয়ে নিতে যাচ্ছে দলটি, যা ছিল রওশনপন্থি নেতাদের দীর্ঘদিনের দাবি। জি এম কাদেরপন্থিরা বিভিন্ন সময়ে তাদের ‘দলের বাইরের’ বলেই সম্বোধন করে আসছেন। অপরদিকে বিএনপির ছেড়ে দেয়া উপনির্বাচনগুলোতে অংশ নিতে কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।
গত ১৯ ডিসেম্বর সোমবার জাতীয় পার্টির বনানীর দলীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দলের মহাসচিব। ওইদিন বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম এবং সংসদ সদস্যরা। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন এক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, বৈঠকে সবাই আসলে ঐক্যের পক্ষেই মত দিয়েছেন। এ জন্য বিভিন্ন সময়ে বহিষ্কৃতদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থাৎ দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে ও বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সময়ে যারা বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাদের দলে ফিরিয়ে আসার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচনে জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের সহায়তা করতে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে টিম পাঠানো হবে।
জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, দলের এই ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে সবাইকে নিয়ে আসা হবে। গত কয়েক বছরে দল থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের যেমন দলে ফিরিয়ে আনা হবে, তেমনি দলীয় প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে যারা বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাদেরও দলে ফিরিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলবে।
দলে জি এম কাদেরের কাছের বলে পরিচিত একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আসলে ঐক্য প্রক্রিয়ারই অংশ হিসেবে বেশ কিছু কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। দলের আসলে সবাই চান ঐক্য হোক। এ জন্য রওশন এরশাদপন্থিদের সঙ্গে আমাদের অবশ্যই আলোচনা হবে। সেখানে যে বিষয়গুলো রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো বহিষ্কৃতদের ফিরিয়ে আনা। দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও অভিমত এই নেতার।
উপনির্বাচনে কৌশলী জাতীয় পার্টি :
বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করায় শূন্য আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদে নিজেদের আসন বাড়ানোর কথা ভাবছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এ জন্য বেশ কৌশলী অবস্থান নিয়েছে দলের নীতিনির্ধারকরা।
দলের নেতারা বলছেন, রংপুর সিটি করপোরেশন ও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন সুষ্ঠু হলেই তারা এর পরের উপনির্বাচনগুলোতে অংশ নেবেন। বিষয়টিকে দলের একটি কৌশলী সিদ্ধান্ত বলেই মনে করেন দলটির নেতারা।
গত সোমবারের বৈঠকে দলের নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেন যে, জাতীয় পার্টি সব উপনির্বাচনে অংশ নেবে। তবে, ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচন সুষ্ঠু হলেই পরবর্তী সব উপনির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। তবে জাতীয় পার্টি যদি মনে করে ভোট সুষ্ঠু হয়নি, সে ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়ামের এক নেতা।
তিনি বলেন, রংপুর সিটি ও গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে পরবর্তী উপনির্বাচনে আমরা অংশ নেব কিনা তা বুঝেশুনে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জাতীয় পার্টির নেতারা মনে করেন, এই রংপুর সিটি আর গাইবান্ধার শূন্য আসনে নিজেদের শক্ত অবস্থান আছে। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার পক্ষে জাতীয় পার্টি।
দল চালাচ্ছেন মহাসচিব :
চেয়ারম্যান জি এম কাদের আদালতের আদেশে দলীয় কর্মকা- থেকে বিরত থাকার কারণে দলের সার্বিক বিষয়গুলো দেখভাল করছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। গত সোমবারও দলের নীতি নির্ধারণী বৈঠকটিতে সভাপতির আসনে ছিলেন তিনি।
জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের মধ্যেই জি এম কাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দলের নেতা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা দলের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান। মৃধাকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয় জি এম কাদেরের সিদ্ধান্তে। মামলা নি®পত্তির আগে জি এম কাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না বলে আপিল বিভাগের আদেশের পর গত বুধবার দলের একাংশ থেকে রওশন এরশাদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। যদিও কিছুক্ষণ পর বলা হয়, রওশন এরশাদের নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।
আগামী ৯ জানুয়ারি দলীয় চেয়ারম্যানকে নিয়ে আদালতে যে শুনানি আছে, তা তার পক্ষে আসবে বলে মনে করেন দলীয় নেতারা। এর পর দলীয় সিদ্ধান্ত দিতে হয়তো জিএম কাদের আর কোনো বাধার মুখে পড়বেন না। ওই শুনানিতে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতারাও উপস্থিত থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com