1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

অশুভ শক্তি দেশে নাশকতার পাঁয়তারা করছে : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার ::
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তবে এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। সারাবিশ্বের থেকে আমরা এখন পর্যন্ত অনেক ভালো আছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে গেলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের উন্নয়ন যাতে আর না করতে পারে এজন্য একটা বিরোধী শক্তি সর্বক্ষণ অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এই দিকে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এক বছর পর জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা অশুভ শক্তি দেশে নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এই অশুভ শক্তি যাতে তাদের অপশক্তি প্রয়োগ করতে না পারে, এজন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও দেশের সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। কিছু মানুষ চায় এই সম্প্রীতি নষ্ট করতে। জঙ্গিবাদ ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ঐক্য বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সকল ধর্মের নেতাদের সহযোগিতায় ধর্মীয় সম্প্রীতি অটুট রাখতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান আরও বলেন, সাড়ে ৭ কোটি মানুষ স্বাধীনতার পরে খেতে পারেনি। তাদের দু’বেলা খাবারের সুযোগ ছিল না। এখন ১৭ কোটি মানুষ এই দেশে বসবাস করছে। তিন বেলা খেয়ে বাঁচতেছে। সৃষ্টিকর্তা হলেন যিনি উনি রিজিকের ব্যবস্থা করবেন। এখন কিন্তু দেশে পরিবার পরিকল্পনার উপর বেশি চাপ নেই। জনগণ আমাদের স¤পদ। ১৭ কোটি মানুষ আর তাদের ৩৪ কোটি হাত একযোগে কাজ করলে অবশ্যই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পোঁছতে পারবো।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। একটি সম্প্রীতির বাংলাদেশ পেয়েছি। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই সকলে সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা বলবো এবং ভালকে ভাল বলে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ঘটনার সৃষ্টি হয়। অতি উৎসাহিরা এসব ঘটনার জন্ম দেন। এই জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অফিসের প্রধানদের নিয়ে এমন সভার আয়োজন করা যেতে পারে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নিয়ে সাধারণ মানুষে বিভাজন সৃষ্টি করে না। ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এগুলো করা হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশ এগিয়েছে। কিন্তু এই প্রযুক্তিও সাম্প্রদায়িক কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা স¤পূর্ণ অপরাধ। তিনি বলেন, আমরা সম্প্রীতির শহরে বেড়ে উঠেছি। বার বার অসত্য সাম্প্রদায়িক ঘটনায় আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয়। আগামীতে নোংরা রাজনীতি প্রতিহত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ, পৌর মেয়র নাদের বখত, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ারুজ্জামান, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরীচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পরিচালনায় সংলাপ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ আল শাহিন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রজত কান্তি সোম মানস, সিলেট বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আবু সিদ্দিকুর রহমান, সিলেট ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উপ-পরিচালক শাহ মো. নজরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক মোবারক হোসেন, মাওলানা মফিজুর রহমান, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মুফতি আব্দুল হক, মাওলানা নুরুল ইসলাম, রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ হৃদয়ানন্দ মহারাজ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. বিমান কান্তি রায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের স¤পাদক পংকজ দে, খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতা ডেনিস চক্রবর্তী, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা মিঠু বড়–য়া ও সঞ্জিব বড়–য়া, হিলিপের জেলা সমন্বয়ক মিজানুর রহমান খান।
সংলাপে বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা দেশের অন্যতম সম্প্রীতির জেলা। আউল-বাউলের জেলা সুনামগঞ্জে সব সময় সম্প্রীতির জেলা হিসাবে সুনাম আছে। যুগের পর যুগ সকল মানুষের ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ-নিমন্ত্রণ পেয়ে আসছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে একে অপরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে আসছেন। সকল ধর্মে জঙ্গীবাদ প্রতিহত করার কথা বলা আছে। পবিত্র কুরআন শরীফেও জঙ্গিবাদকে নিষেধ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে উত্থাপিত দাবিগুলোর বিষয়ে আরও অনুদান বরাদ্দের ব্যবস্থা করবেন বলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান আশ্বাস প্রদান করেছেন।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com