শহীদনূর আহমেদ ::
জামালগঞ্জ সরকারি কলেজে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত প্রমোটেড শিক্ষার্থীদের অনার্স তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের ১৯ ডিসেম্বর থেকে নতুন বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে একজন শিক্ষার্থীকে প্রদান করতে হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার ফি বাবদ ২০০০ টাকা, কেন্দ্র ফি ৪৫০ টাকা, ইনকোর্স ফি ৩০০ টাকা, সেশন ফি ১১৫০ টাকা এবং মাসে ৫০০ টাকা করে ১২ মাসের বেতন ৬০০০ টাকাসহ ৯ হাজার ৯০০ টাকা কলেজের নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে ভর্তি ফি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে। সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে এমন উচ্চ ফি’কে ভর্তি বাণিজ্য আখ্যা দিয়ে তারা বলছেন, করোনা ও বন্যা পরবর্তী সময়ে হাওরাঞ্চলের মানুষ আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন। জীবিকা নির্বাহ করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হিমশিমে পড়তে হচ্ছে অনেককেই। এমন অবস্থায় সরকারি কলেজে এমন উচ্চ ভর্তি ফি নিয়ে শিক্ষার নামে বাণিজ্য করছেন সংশ্লিষ্টরা। যেখানে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার টাকার মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে সেখানে জামালগঞ্জ সরকারি কলেজে ৯৯০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এটি এক ধরনের প্রহসন। শিক্ষার মান্নোনয়ন ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর হার কমিয়ে আনতে ভর্তি ফি সহনশীল পর্যায়ে আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সাধারণ অভিভাবকরা।
মো. আফজাল হোসেন বলেন, জামালগঞ্জ সরকারি কলেজ ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ফরম ফিলআপের ফি রাতদিন পার্থক্য। সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে আমাদের উচ্চ বেতন দিয়ে পড়তে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ নির্দয়ভাবে এতো টাকা ধার্য্য করেছেন। নি¤œ আয়ের মানুষ কি করে এই টাকা জোগাড় করবে। এক্ষেত্রে জামালগঞ্জের সচেতন মানুষদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।
আব্দুর রউফ নামে এক অভিভাবক বলেন, এবার আমরা অনেক ক্ষতির মুখে আছে। আয় নেই ব্যয় বেশি। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এই অবস্থায় এমন উচ্চ ভর্তির ফি আমাদের উপরে জুলুম হয়ে পড়বে।
জামালগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বিন বারী বলেন, আমাদের কলেজ এখনো পুরোপুরি সরকারি হয়নি। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত রয়েছে। অনার্স পর্যায়ে এখনো এমপিও হয়নি। তাই ৫০০ টাকা মাসিক বেতন নেয়া হয়। তাছাড়া পরীক্ষার খরচ, মিলাদ, পূজা, ক্রীড়াসহ নানা অনুষ্ঠানের জন্য আরও কিছু টাকা ধরা হয়েছে। ইনকোর্স ও কেন্দ্র ফি বোর্ডকে দিতে হবে। এই পরিমাণ ফি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য সহনশীল হবে কি এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, যারা অপারগতা জানায় তাদের জন্য কলেজ থেকে আরও ২৫০০ টাকা কম রাখা হয়।