1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

চাঁনপুর সরেজমিন পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের ৯ পরিবারকে ‘সমাজচ্যুতি’র ঘটনায় সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক। এসময় উপস্থিত ছিলেন জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোহাম্মদ আবদুন নাসের।
শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চানপুর গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলেন এবং ৯ পরিবারের ঘর ভেঙে মালামাল চুরি যাওয়ার ঘটনা পরিদর্শন করেন। ওই সময় যে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে সেই জমিও পরিদর্শন করেন তিনি। পরে গ্রামের কালীমন্দির প্রাঙ্গণে বসে উপস্থিত কয়েক শত মানুষের সাথে কথা বলে জমি সংক্রান্ত বিরোধ সৃষ্টির মূল কারণ খোঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
এ সময় উপস্থিত সকলের সামনে স্থানীয় বাসিন্দা রাম চন্দ্র তালুকদারের সাথে কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক। তখন রাম চন্দ্র তালুকদার বলেন, আমার ক্রয়কৃত জমি না দেয়ায় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যে জায়গা নিয়ে আজ ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে। এই জায়গার বিভিন্ন অংশ বিগত স্যাটেলমেন্ট জরিপের সময় গ্রামের অনেকের নামে রেকর্ড করে নিয়ে যায়। পরে ২০১০ সালে আমাদের পরিবারের লোকজন অনেকের কাছ থেকে দলিলে ক্রয় করে নেন। এরপরও গ্রামের কতিপয় ব্যক্তির চাপে কালী মন্দিরের নামে জায়গা দিতে বাধ্য হই। এরপরও আমাদের পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে গ্রামের কতিপয় মোড়ল মাতব্বরেরা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অপরপক্ষ ধীরেন্দ্র তালুকদার বলেন, আমাদের গ্রাম্য পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত ছিল হাওরের কান্দার জমি কেউ রেকর্ড করে নিতে পারবে না। তবুও কেউ মানেন না
সুনীল বিশ্বাসও একই কথা বলেন।
কালীমন্দির প্রাঙ্গণের সভায় উপস্থিত উকিল বিশ্বাস, সাবেক ইউপি সদস্য সুজন হালদারও গ্রামের পক্ষ হয়ে কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাচনাবাজার ইউপি’র ৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মো. মানিক মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য শহর আলী, সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক আব্দুল মজিদ, কুকড়াপশী গ্রামের বাসিন্দা আমির আলী, কালা মিয়া, চানপুর গ্রামের পান্ডব সরকার, নিশি সরকার, নিরঞ্জন সরকার, গোপী তালুকদার, গুরুদাস তালুকদার প্রমুখ।
সভায় শৃংখলা রক্ষায় সকলে কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দিতে ভূমিকা রাখেন জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোহাম্মদ আবদুন নাসের।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক সকলের কথা মনোযোগ সহকারে শুনে তিনি বলেন, গ্রামে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে জমি নিয়ে। এই বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এই বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামে সকলে মিলে এক সাথে বসবাস করা হচ্ছে না। গ্রামের বাইরে আলাদা আলাদা থেকে গ্রামের বিরোধ আরও বাড়ছে। আজ আমরা এখানে সালিশ বা বিচার করতে আসিনি। আমরা এসেছি বিরোধ সৃষ্টির মূল বিষয়টি খুঁজে বের করতে। সত্য বিষয়টি রিপোর্ট করা হবে। এই গ্রামের বিরোধ বিষয়ে জানতে একাধিকবার আমাদের অফিসারেরা এসেছেন, এসময় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সবাই যেন গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। এমনটি করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, গ্রামে সকলে মিলে এক সাথে থাকলে অবশ্যই ভাল হতো। বিরোধ কম হতো। আজ যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে, কোনো এককালে এই জমি হয়তো খাস ছিল বা অন্য কারো ছিল। এখন এই জমির মালিক ৬২ জন হয়েছেন।
তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ সবাই দরিদ্র এবং দিনমজুর শ্রেণীর। গ্রামে বিরোধ থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও ভাল হয়ে গড়ে উঠতে পারবে না। আজ বড়রা যা করছেন ছোটরাও তাই শিক্ষা পাবে।
উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এবং যেভাবে সম্ভব চানপুর গ্রামের এই বিরোধ নিরসন জরুরি প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, গ্রাম থেকে কাউকে তাড়িয়ে দেওয়ার অধিকার কারো নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। সকলে তাদের বাড়িতে থাকতে জানমালের নিরাপত্তা চায়। চায় সামাজিক শান্তি।
সভায় চানপুর গ্রামে বহিরাগত ব্যক্তি নেত্রকোনা জেলার মদনের বাসিন্দা সুবল সরকারকে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলায় তাকে থামিয়ে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক। এক পর্যায়ে সুবল সরকারকে সভা এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ওই ব্যক্তি গ্রাম্য কোন্দল সৃষ্টিতে ভূমিকায় কাজ করে আসছিল বলে অভিযোগ করেন গ্রামের একাধিক ব্যক্তি।
গ্রামের একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, চানপুর গ্রামের কতিপয় পঞ্চায়েত নামের ব্যক্তিরা যে কাউকে কান ধরে উঠবস করায়। নাকে খত দেয়ায়। এক ঘরে রাখা এমন সিদ্ধান্ত দেয়া তাদের দীর্ঘদিনের স্বভাব। ব্যক্তি স্বার্থে এমনটি করেন তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রিপন কুমার মোদক বলেন, এক সময় কোনো কোনো গাঁও গ্রামে শুনেছি এসব হতো। এখন এসব নেই। এগুলো করা মারাত্মক অপরাধ। তিনি বলেন, সকলে মিলে একটু একটু করে জায়গা দান করেন। দেখবেন চানপুর গ্রামের সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com