1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২

মাহমুদুর রহমান তারেক
১৯৯৪ সাল। আব্বার চাকুরির কারণে আমাদের বসবাস ছিল সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের দিঘলী গ্রামে। আব্বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ছিলেন। তখন দিঘলী গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। ব্যাটারি দিয়ে দু’এক বাড়িতে টিভি দেখা হতো, তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। সাদাকালো টেলিভিশনে এন্টিনা টাঙিয়ে টিভি দেখা হতো। চ্যানেল শুধু বিটিভি।
বিশ্বকাপ চলছে, আমাদের বাসায় বিদ্যুৎ নেই, টিভিও নেই। খেলার ফলাফল মানুষের মুখ থেকেই শুনতে হতো। সেমিফাইনালের পর ফাইনাল। টিভি না থাকায় ফাইনালের ফলাফল আগের মতোই মানুষের মুখে শুনাই ভরসা। যদিও বিশ্বকাপের কোনো খেলা তখন পর্যন্ত টিভিতে দেখা হয়নি।
আমার মামার বাড়ি ছাতক শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায়। দিঘলী পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট থেকে গাড়িতে করে আধা ঘণ্টার দূরত্ব। হঠাৎ ফাইনালের দিন সকালে আব্বা বললেন, ফাইনাল খেলা দেখবেন ছাতকে আমাদের মামার বাড়ি গিয়ে। একথা শুনে আম্মাকে দিয়ে আব্বাকে অনুরোধ করালাম আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে। প্রথমে একটা ধমক দিলেও পরে রাজি হলেন। দুপুরের দিক বেবি ট্যাক্সি চড়ে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট থেকে ছাতক রওয়ানা হলাম। আধা ঘণ্টার মধ্যে ছাতক পৌঁছে গেলাম। রাতে ফাইনাল দেখার অপেক্ষা। মামাদের বাসায় দুইটা টিভি ছিল। ড্রয়িং রুমে সাদাকালো এবং বড় মামার রুমে রঙিন বড় আকারের একটা টিভি।
অন্যদের সঙ্গে আমি রঙিন টিভিতে খেলা দেখতে বসলাম। জীবনে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা। তাও আবার ফাইনাল খেলা। নাম শুনা দুই দল ব্রাজিল ও ইতালির খেলোয়াড়দের টিভিতে দেখছি। আনন্দ আর উত্তেজনার শেষ নেই। তবে এখনকার সময়ের মতো টিভি দেখে চিৎকার, চিল্লানির সুযোগ ছিল না। খেলার সময় মামিসহ অন্যরাও দেখলাম বেশি কথা না বলেই খেলা দেখছেন। দুই দল ফাইনাল খেলছে। একটা দলের পক্ষে তো থাকতেই হবে। রুমে খেলা দেখা সবাই দেখলাম ব্রাজিল সমর্থক। আমি কিছু না বুঝেই ইতালিকে সমর্থন দিলাম। তাও নীরবে। আমি কোনো খেলায়াড়কে চিনি না। চেনার কথাও না। টানটান উত্তেজনার ফাইনাল। দুই দলই মরিয়া হয়ে চ্যা¤িপয়ন হওয়ার জন্য খেলছে। খেলা প্রথমে ড্র হয়। পরে টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে ইতালিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে যায় ব্রাজিল। আমার প্রথম সমর্থন করা দল ইতালি হেরে যায়। তবে তেমন মন খারাপ হয়নি। এরপর থেকে ইতালির সমর্থক হয়ে গেলাম। সারা বছর খেলা না দেখলেও বিশ্বকাপ এলে ইতালির খেলা দেখতাম। তবে মাঝে মধ্যে আর্জেন্টিনাকেও সমর্থন দিতাম, খেলা চলাকালে।
পরবর্তীতে আমাদের স্থায়ী নিবাস হয় সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জ শহরে আমাদের বাসায় ইতালির পতাকাও আমি দুই বিশ্বকাপে টানিয়েছি। তবে পতাকা সংগ্রহ করা ছিল খুব কষ্টকর। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল বাদে অন্য দলের পতাকা বাজারে পাওয়া যেত না। গত দুটি বিশ্বকাপে খেলতে পারেনি ইতালি। এজন্য অবশ্য মন খারাপ ছিল। প্রিয় দল বিশ্বকাপে না থাকায় খেলা দেখলেও জোরালো সমর্থন ছিল না কোন দেশের প্রতি। ছয় বার ফাইনাল খেলে চার বার (১৯৩৪, ১৯৩৮, ১৯৮২, ২০০৬) শিরোপা জয় করা এবং সর্বশেষ ২০০৬ সালে ফ্রান্সকে উড়িয়ে চ্যা¤িপয়ন হওয়া প্রিয় দলটি আগামী বিশ্বকাপে খেলবে, সে আশায় রইলাম।
[লেখক, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com