বালু মহাল লুট নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন করা হয়েছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘লুট হচ্ছে ধোপাজান-চলতি নদী বালু মহাল ॥ বিজিবিকে বালু সরবরাহের নামে কোটি টাকার বাণিজ্য’। দিনের বেলা বালু সংগ্রহের কোনও কাজ চলে না বটে, কিন্তু রাতের বেলা বালু তোলার কাজ শুরু হয়। বিষয়টা অনেকটা এমন যে, দিনের বেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেওয়া যায় না কিন্তু রাতের বেলা ফাঁকি দেওয়া যায়। অর্থাৎ রাতে প্রশাসন ঘুমিয়ে থাকে। কে বা কারা এই লুটের সঙ্গে জড়িত সে-টা যেমন তেমন, সবচেয়ে গুরুতর কথা হলোÑ প্রশাসনের নাকের ডগায় এই লুটপাটের ঘটনা ঘটছে এবং প্রকারান্তরে প্রমাণিত হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই লুটপাটের প্রতি সহিষ্ণুতার নীতি লালন করা হচ্ছে। এমনটা তো কীছুতেই বিশ^াসযোগ্য হতে পারে না যে, সংশ্লিষ্ট এলাকার সব মানুষ জানে কিন্তু প্রশাসন সেটা জানে না। এই প্রশাসনিক উপেক্ষার পেছনে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে কি না, বা প্রশাসন এইরূপ অবৈধ কর্মকা- প্রতিরোধে কেন তৎপর হয়ে উঠছে না তার গভীরে কোনও গমগচ্ছ আছে কী না সাধারণ মানুষের জানা নেই। কিন্তু তাঁরা প্রশাসনিক উপেক্ষার বিষয়টি ঠিকই প্রত্যক্ষ করছেন।
অভিজ্ঞমহলের অভিমত এই যে, হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে এই বালুমহাল লুটপাটকে অস্বীকার করা হোক আর যদি অস্বীকার করা না হয় তা হলে প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যেখানে ধোপাজান-চলতি নদী বালু মহালে বালু উত্তোলনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান আছে সেখানে কী করে বালু উত্তোলনের ঘটনা ঘটতে পারে, কীছুতেই বোধগম্য নয়। তাছাড়া প্রশ্ন উঠেছে যে, হাইকোর্টের আদেশ অবমাননার কী হবে? মানুষের শেষ আশ্রয় হাইকোর্ট কী এর কোনও বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে পারেন না? এমতাবস্থায় বিদগ্ধমহলের প্রশ্ন এই যে, বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা কি আসলেই আইনবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত হয়ে পড়েছে? তা না হলে বালুমহাল লুটের প্রশ্নে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ নির্বিকার কেন? আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে এই স্থবিরতার কোনও যৌক্তিকতা আছে কি?