ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ আহমেদের বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপন কুমার দেউরীকে মারধরসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। রোববার বিকেল ৫টায় থানা রোডস্থ ধর্মপাশা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে করে স্বপন কুমার দেউরী এমন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বপন কুমার দেউরী জয়শ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১০ সালের ৭ নভেম্বর যোগদান করেন। ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ আহমেদ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে স্বপন কুমার দেউরীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও তাঁর সাথে অসদাচরণ করে আসছেন। অন্য
শিক্ষকদের তুলনায় স্বপন কুমার দেউরীকে তুলনামূলকভাবে বেতন কম দেওয়া হয়। কোনো কোনো মাসে তাঁর বেতন না দিয়ে রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক নিজেই তা আত্মসাৎ করেন। প্রধান শিক্ষক ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বপন দেউরীকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রশিক্ষণেও পাঠাননি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বপন কুমার দেউরীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখন প্রধান শিক্ষকের কথায় কিছু গরিব শিক্ষার্থীকে কম টাকায় ভর্তি করায় প্রধান শিক্ষক তাকে গালমন্দ করেন এবং ২৯ জানুয়ারি এরই জেরে প্রধান শিক্ষক তাঁর টেবিলে থাকা কাঠের নাম ফলক দিয়ে স্বপন কুমার দেউরীকে সজোরে আঘাত করেন। পরে স্বপন কুমার দেউরী ধর্মপাশা ও ঢাকায় চিকিৎসা নেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সুরাহা না হলে ঘটনার দুইদিন পর প্রধান শিক্ষক তাঁকে (স্বপন) শোকজ করেন। তাই নিরুপায় হয়ে স্বপন কুমার দেউরী শোকজের তিনদিন পর ধর্মপাশা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বিষয়টি পরে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে মামলায় রূপান্তর হয়। কিন্তু স্বপন কুমার দেউরী প্রধান শিক্ষককে ভয় পেয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যাননি। এদিকে মামলা পরিচালনা করতে প্রধান শিক্ষকের যে টাকা খরচ হয়েছে তা পরিশোধের জন্য স্বপন কুমার দেউরীকে চাপ দেন প্রধান শিক্ষক। স্বপন টাকা না দেওয়ায় কোনো নোটিশ ছাড়াই গত অক্টোবর মাসের বেতন কেটে দেওয়া হয়। এমনকি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতেও নিষেধ ও মৌখিকভাবে স্বপনকে বরখাস্ত করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণসহ বিদ্যালয়ের নীতিমালা বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকাসহ তাঁর (স্বপন) বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ফলে ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকের পরামর্শক্রমে তাঁর বেতন বন্ধ করা হয়। প্রহারের বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ ব্যাপারে সকল শিক্ষক আমার পক্ষে আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন।