সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে (ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র) প্রতিবন্ধীদের এক্সেস নেই, এটি আজ আমি জানলাম। আমার মাথায় ছিল না। আগামীতে যে সেন্টারগুলো তৈরি হবে, সেখানে আমি আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার (অবকাঠামো) ডিজাইনারদের সঙ্গে কথা বলব। তাদের (প্রতিবন্ধী) উপযোগী করে সেগুলো তৈরি করা হবে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার অডিটোরিয়ামে ডিজঅ্যাবলড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন (ডিআরআরএ) আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সমাজের মূলধারায় একীভূতকরণে করণীয়’ শীর্ষক একটি জাতীয় মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, একসময় তো প্রতিবন্ধীদের লুকিয়ে রাখতেন, বলতেন না মা-বাবা। কষ্ট পেতেন নীরবে। এখন তো এটি কেটে গেছে অনেকটা। অল্পসংখ্যক হয়তো এখনো আছে। নেই, আমি বলব না। তবে পরিবর্তন হয়েছে। এর কারণ শিক্ষার হার বেড়েছে, অর্থনৈতিক সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। সব সমস্যার মূল কারণ আসলে আর্থিক সক্ষমতা।
তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন ভাতা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী, যেগুলো চিন্তা করেনি কেউ। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় ভাতা- এগুলো তিনি ইন্ট্রোডিউস করেছেন। অনেকেই বলেন, তোমরা এত কম টাকা দিয়ে কি সাহায্য করছ মানুষকে, বাড়িয়ে দাও। কিন্তু, যার পকেটে শূন্য টাকা, তার কাছে এই টাকাই কিন্তু বিশাল কিছু। এই টাকাটাই বিশাল একটি অভিঘাত সৃষ্টি করে, এটা আপনি সামনাসামনি না গেলে বুঝবেন না। এটি আসলে প্রধানমন্ত্রীর একটি স্ট্র্যাটেজি। তার কৌশল হলো, যদি বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে এর ওপর তারা নির্ভর হয়ে পড়বেন। তাহলে উল্টো হবে।
এম এ মান্নান বলেন, এই মুহূর্তে আমরা একটি আর্থিক চাপে আছি, এটি লুকোছাপার বিষয় নয়। এ নিয়ে আমাদের অপরাধবোধও নেই। সারা বিশ্বেই এটি হচ্ছে। আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন চাই। পরিবর্তন হচ্ছে, এটা আমাদের চরম শত্রুও স্বীকার করবে।
তিনি বলেন, এই যে সবার মাথার ওপর বিদ্যুৎ, এর চেয়ে বড় আশীর্বাদ কি হতে পারে। এগুলা খোঁটা দেওয়ার বিষয় নয়। খামোখা খুঁত খোঁজা উচিত নয়। এটি কেন স্বীকার করা হচ্ছে না? এই যে গ্রামে-গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তারের সেবা পাচ্ছেন আমাদের মা-চাচিরা, বিনামূল্যে সেবা পান, এগুলো নিয়ে কথা বলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, কথায়-কথায় মালয়েশিয়ার উদাহরণ দেওয়া হয়, মাহাথির মোহাম্মদ তো ২২ বছর টানা দেশ চালিয়েছেন। তখন তো বলা হয়, মাহাথির মোহাম্মদ ভালো মানুষ। শেখ হাসিনার যখন ১০ বছর হয়ে যায়, তখন বিরক্ত হয়ে যায়! দুই ধরনের মনোভাব। কাজেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা জরুরি। যদি তিনি নির্বাচিত কি না সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকে, ফাইন, কমিশন গঠন করুন, কাগজ লিখুন। কিন্তু, সেটি না করে আপনারা লাঠিসোঁটা নিয়ে অমুক তারিখের পর আর থাকতে পারবেন না, আমাদের কথা চলবে এই ধরনের অরাজক, অবৈধ, অন্যায় কথা বলে রাজনীতি করা যায় না। শুধু রাজনীতি নয়, আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি হবে, আমাদের জীবনমান আরও নিচে যাবে। এই প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের জীবনমান আরও নিচে নামবে।