1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৮৫ শতাংশ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
কভিডের ধাক্কা শেষ না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পাল্টে দিয়েছে দেশের অর্থনীতির সব হিসাব-নিকাশ। অস্বাভাবিক আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে দ্রুত কমছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। অর্থের জোগান নিয়ে সংকটে আছে সরকার। সংকট মোচনে এখন প্রধান ভরসা বৈদেশিক ঋণ। কিন্তু এমন দুর্দিনে যখন সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রার জোগানের প্রয়োজন, ঠিক সে সময়ে বৈদেশিক ঋণের উৎসও সংকুচিত হয়ে আসছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় দুটিই কমতে শুরু করেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। আর একই সময়ে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৮৫ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থনৈতিক স¤পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
ইআরডির হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থছাড় হয়েছে ১৯৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৬২ কোটি ৬১ লাখ ডলার; অর্থাৎ অর্থছাড়ের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বিভিন্ন দেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিশ্রুত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। অথচ এর আগের বছরের একই সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ২৭৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ২৩৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। গত বছর এ সময় পর্যন্ত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ৬৫ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিলেও এবার দিয়েছে মাত্র ৫ লাখ ডলারের প্রতিশ্রতি। বিশ্বব্যাংক গত বছরের একই সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৫০ কোটি ডলারের, এবার দিয়েছে মাত্র ৩০ কোটি ডলারের।
ইআরডির হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরের তুলনায় এ বছর ঋণের সুদ পরিশোধের হারও কমেছে। এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে সুদসহ ঋণ পরিশোধ হয়েছে ৭২ কোটি ৪২ লাখ ডলার। গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৭৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার। কিন্তু ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় টাকার অঙ্কে সুদসহ ঋণ পরিশোধ গত বছরের চেয়ে বেশি। টাকার অঙ্কে এ বছর ঋণ পরিশোধ হয়েছে ৬ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা, গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৬ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।
অক্টোবর পর্যন্ত বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় হয়েছে জাপানের কাছ থেকে, ৫৮ কোটি ডলার। এরপরই সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে চীন, ৪৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এসেছে ৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার, এডিবি দিয়েছে ২৪ কোটি ডলার। রাশিয়ার কাছ থেকে ছাড় হয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে ছাড় হয়েছে ১২ কোটি ডলার।
চলতি অর্থবছরে প্রকল্প সহায়তা ও বাজেট সহায়তা মিলিয়ে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। অর্থবছরের শুরুতে মোট বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩৮২ বিলিয়ন ডলার। পরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে রাজি হওয়ায় সেখান থেকে ৪৪৮ মিলিয়ন ডলার চলতি অর্থবছরে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মোট ঋণ পাওয়া যাবে ১২ হাজার ৮৩০ মিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ধরে)।
অর্থনৈতিক স¤পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে ৩৩০টি প্রকল্পের বিপরীতে বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর বাকি ৪৭ হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তায় খরচ করা হবে। ২৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বৈদেশিক ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। যার মধ্যে ১৯ কোটি ২১ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। ১৭১ কোটি ২০ লাখ ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার ছাড় করেছে। ২৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেবে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) ও যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৪৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। ইউরোপ উইংয়ের দেশগুলো থেকে আসবে ২২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সেখান থেকে ইতিমধ্যেই ১০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার পাওয়া গেছে। ২৯৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেবে এশিয়া জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) ও ফেলোশিপ অ্যান্ড ফাউন্ডেশন (এফঅ্যান্ডএফ) উইং সংশ্লিষ্ট দেশ। তারা ইতিমধ্যে ৩৮ কোটি ২৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ ও সংস্থা থেকে আসবে ২৭ কোটি ডলার। এখান থেকে ছাড় হয়েছে তিন কোটি ডলার।
এদিকে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে; যা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় মাস অন্তর সাত কিস্তিতে পাওয়া যাবে। আইএমএফের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ৪৪৮ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com