1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংলাপ চায় না কেউই

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
হঠাৎ আবারও আলোচনায় সংলাপ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। জবাবে বিএনপি বলছে, নির্দলীয় সরকার নিশ্চিত হওয়ার আগে কোনো সংলাপ নয়। দাবি আদায় না করে সংলাপ হবে অর্থহীন। তবে বিএনপির সমমনা শরিক দলের কেউ কেউ বলছেন, আন্দোলন ও সংলাপ সমানতালে চলতে পারে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই পরামর্শ দেন আলোচনা করতে হবে। কাদের সঙ্গে? ওই বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি, যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাদের সঙ্গে?
যদিও তিনি চলতি বছরের মাঝামাঝিতে জানিয়েছিলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসতে চাইলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সেখানে চা খেতে চান তিনি। পাশাপাশি চায়ের সঙ্গে আলাপও হতে পারে। বিএনপির কথা শুনতে চান প্রধানমন্ত্রী। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলাপ-আলোচনা চলে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর শনিবার নরম সুর পাল্টে যায়। রাজনীতিতে সংলাপ বহুল পরিচিত ও সমাদৃত শব্দ। অনেক দিন পর তা আবারও আলোচনায় ফিরেছে। তবে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ করতে চায় না বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, সংলাপের সম্ভাবনা নেই। আর বিএনপির সঙ্গে তো প্রশ্নই আসে না। কারণ বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। যেটি কানাডার আদালত রায় দিয়েছেন। তা ছাড়া বিএনপি নামক দলটি দেশে অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা ও পশুর ট্রাকে আগুন দিয়েছে। তাদের দোসর জামায়াত। অর্থাৎ তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। ইতিমধ্যে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন, নির্বাচনের আগে কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ হবে না। সে ক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। এখানে কারও সঙ্গে সংলাপের দরকার নেই। যদি কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, সংবিধান অনুযায়ী তারা নির্বাচনে অংশ নেবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমার জানা মতে, এখন পর্যন্ত কোনো দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের সিদ্ধান্ত নেই। এখন দলের কাউন্সিল নিয়ে সবাই ব্যস্ত। তবে নির্বাচনের আগে সংলাপ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হতে পারে কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়।
বিরোধীদল বিএনপিও সংলাপ চায় না। এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে দলটি। তারা বলছে, সংলাপ বহু হয়েছে কিন্তু অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। সংলাপের কোনো প্রতিশ্রুতিই সরকার রাখেনি। সংলাপ শুধুই চা খাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা কি সংলাপের কথা বলেছি। তাহলে সংলাপের প্রসঙ্গ আসবে কেন?
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আর কত সংলাপ। এখন কার্যকর করার পালা। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই নির্দলীয় সরকারের দাবি করে আসছি। এটি নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো সংলাপ নয়। সংলাপ তো ২০১৮ সালেও দেখেছি। কি লাভ হয়েছে? সেই আলাপের কথা তো আমরা ভুলে যাইনি। জনগণ দেখেছে গণভবনের সেই আলাপ সরকার কতটুকু রেখেছে।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আমরা এক দফা দাবিতেই আছি। নির্দলীয় সরকারের ফয়সালা না হলে সংলাপ নিয়ে কোনো আলোচনা নয়। আগে দাবি পূরণ হোক, পরেরটা পরে হোক। বিএনপির সাংগঠনিক স¤পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ২০১৮ সালে সংলাপের নামে জোর করে ডিনার খাইয়ে মুখ পুড়িয়েছিলেন। এবার আর নয়।
একটি অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, আমরা একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছি। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সংলাপ করেছি কিন্তু সরকার সেখানেও চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তিন মাস পর নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে তারা প্রতারণা করেছে।
বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার ভাষ্য, সরকার এখন বিভিন্ন চাপে আছে। আন্তর্জাতিক চাপ তো আগে থেকেই আছে। এখন নতুন করে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে পড়েছে। এসব চাপ সামাল দিতে তারা সংলাপের নামে নানা কথা বলছে। হয়তো কয়েক দিন পর আমন্ত্রণ জানাবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংলাপকে ইতিবাচকভাবে দেখা যেতে পারে। কারণ যুদ্ধের ময়দানেও আলোচনার দ্বার একেবারে বন্ধ করা উচিত নয়। আলোচনা-আন্দোলন উভয়ই চলতে পারে কিন্তু আমার কাছে সংলাপ নিয়ে সংশয় আছে। কেননা আলাপ বেশিরভাগ সময় কথা চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, জটিলতা তৈরি হলে আলোচনার বিকল্প নেই। রাজনীতিতে সংলাপ খুবই প্রাসঙ্গিক। ১৯৯৬ সালে তাই হয়েছিল। কেননা রাজনীতিতে সংঘাত শুভ কিছু বয়ে আনবে না। আর বিদেশিরাও চাইবেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একটি সমঝোতায় পৌঁছাক সংলাপের মধ্য দিয়ে।
তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হারুন অর রশিদ বলেন, সংলাপ হবে কতগুলো এজেন্ডা নিয়ে কিন্তু বিএনপির যে দাবি তা নিয়ে সংলাপের অবকাশ নেই। কারণ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। ইভিএম প্রয়োগ কিংবা নির্বাচন স্বচ্ছ করতে সংলাপ হতে পারে। আর বিএনপি সংলাপের কোনো সুযোগও রাখেনি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com