স্টাফ রিপোর্টার ::
ভোগান্তি শেষে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ-এর সাথে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন নেতৃবৃন্দ।
সুনামগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুজাউল কবির বলেন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে এবং এটির একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে বিধায় আমরা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। তিনি আরও জানান, আমরা বাস টার্মিনালের পুকুর ভরাট করে টার্মিনাল বড় করার দাবি জানিয়েছি। আমরা জানিয়েছি বাস টার্মিনালে লোকাল বাসই রাখার জায়গা হয় না। এর মধ্যে দূরপাল্লার বাস রয়েছে ৮০টির বেশি। এই বাসগুলো টার্মিনালে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং পুলিশ সুপার মহোদয়ের সাথে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং সে প্রেক্ষিতে পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিবহন ধর্মঘট ডাকার কারণে শুক্রবার বিকেলে নেতাদের সঙ্গে বসেছিলাম তারা কিছু দাবি জানিয়েছে। সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করব।
উল্লেখ্য, গত বৃহ¯পতিবার বিকেলে শহরের ওয়েজখালি এলাকার সড়ক থেকে শ্যামলী, মামুন ও সাকিল পরিবহনের তিনটি বাস জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় চালক-শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন ওইদিন রাতেই। এজন্য শুক্রবার সকাল থেকে আন্তঃজেলা সিলেট সুনামগঞ্জ ছাড়াও রাজধানী ঢাকার উদ্দেশেও ছেড়ে যায়নি কোন বাস। শুক্রবার সকাল থেকে শহরের নতুন বাস স্টেশন এলাকা থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছাড়েননি বাস চালক-শ্রমিকরা। এমনকি ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলেও বাধা দেয়া হয়। এ সময় সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ স¤পাদক নুরুল হক বলেন, আমাদের উপর পুলিশ অত্যাচার শুরু করেছে, আমাদের বাস টার্মিনাল সংস্কার করার দাবি করে আসছি কারণ আমাদের এখানে লোকাল বাসও রাখার জায়গা নেই, তার মধ্যেই বাহিরের বাসগুলাও আসে এগুলো রাখব কিভাবে পুলিশ না বুঝে আমাদের বাসগুলোর উপর মামলা দিয়ে হয়রানি করে, আমরা তার প্রতিবাদ জানাই। যতদিন পর্যন্ত তারা আমাদের এই বিষয়ে কোন সুরাহা হবে না আমরা ধর্মঘট পালন করে যাব।
অপরদিকে, যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তারা বাস শ্রমিক ও মালিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে আসা খোকন মিয়া বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা জনস্বার্থে কোনো পদক্ষেপ নেন না। যাত্রী-সুবিধার উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেই। আর নিজেদের স্বার্থে এই ধর্মঘট অযৌক্তিক।
আরেক যাত্রী রফিক মিয়া বলেন, এটি কোনো কথা হলো? মন যা চায়, তাই করবেন পরিবহন সেক্টরের নেতা আর কিছু শ্রমিক নেতারা? এই অবস্থা থেকে বের হতে হবে। পরিবহন সেক্টরের মালিক-শ্রমিককের কাছে মনে হচ্ছে সবাই জিম্মি। তাদের বিরুদ্ধে কারো কোনো কথা বলা ও তাদের প্রতিরোধ করার সাহস নেই কারো।
হাসননগর এলাকার শাহরিয়ার বাপ্পি বলেন, আজ সিলেট যাওয়া আমার জন্য খুব প্রয়োজন ছিল। বাসস্টেশন এসে শুনি বাস ধর্মঘট চলছে। এটা কেমন ধর্মঘট কয়েকদিন আগেও তারা ধর্মঘট ডেকেছিল। এসব ধর্মঘট অযৌক্তিক। তারা সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, সড়কে দূরপাল্লার বাসগুলো পার্কিং করা হয়। এতে যেমন যানজটের সৃষ্টি হয়, তেমনি দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে।