স্টাফ রিপোর্টার ::
‘নারী ও কন্যা নির্যাতন বন্ধ করি, নতুন সমাজ নির্মাণ করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হলো আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এ উপলক্ষে শুক্রবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহরের ষোলঘরস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মলনে বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য্য। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ স¤পাদক শরীফা আশ্রাফি, লিগ্যাল এইড স¤পাদক রাশিদা বেগম, সাংগঠনিক স¤পাদক পাঞ্চালি চৌধুরী, সদস্য রুবি দাস, শান্তা পাল ও তৃণা দে।
সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রাশিদা বেগম। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি স্বেচ্ছাসেবী ও গণনারী সংগঠন। এই সংগঠন নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘ ৫০ বছরেরও অধিক সময় ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এবং নারী ও কন্যা নির্যাতন বিরোধী সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সারাবিশ্বে প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর – ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় প্রতিবছর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল শাখা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে এই দিবস পালন হয়ে আসছে। বর্তমানে বিশ্ব কোডিও -১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত। আমরা লক্ষ্য করছি নারীর অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি সমাজের ভেতরে অবক্ষয় হচ্ছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বিশেষ করে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা করার মতো ঘটনা অব্যাহতভাবে ঘটে চলেছে, যা উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি একটি ধর্মীয় উগ্রবাদী সম্প্রদায় নানা অপতৎপরতা চালিয়ে সমাজকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ফলে সমাজের মধ্যে সাধারণ মানুষ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারী নিরাপত্তাহীন এবং প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যা নারী আন্দোলনকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ও বৈষম্যমূলক আইন, নীতি, প্রথা পরিবর্তন সাপেক্ষে সমতাভিত্তিক সমাজ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনের শাসন গড়ে তুলতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় অনেকগুলো শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আদিবাসী নারী, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া। কিন্তু এই ধরনের ঘটনায় বিচার দৃষ্টান্তমূলক নয়। ধর্ষণ ও নারীর সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কঠোর অবস্থান নেয়া ও আইনী কাঠামোতে তার প্রতিফলন জরুরি এবং তো এখন এ সময়ের দাবী। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে ধর্ষণের বিচারে বিশেষ নজর দিতে হবে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আসুন নারী ও কন্যার প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তুলি।