স্টাফ রিপোর্টার ::
পরিবহন ধর্মঘটের বাধা মানতে নারাজ বিএনপি নেতাকর্মীরা। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তারা বিভাগীয় সমাবেশে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটের পথে যাত্রা করেন। সুনামগঞ্জ থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে সিলেটে।
শুক্রবার দুপুরে বিশাল মোটর সাইকেল বহরে করে সুনামগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা সিলেট সমাবেশে যোগ দেন। লাঠিতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা বেঁধে মোটর সাইকেল বহর নিয়ে তারা রওয়ানা হন। জেলা শহরের আব্দুজ জহুর সেতু থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নূরুলের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ হাজারো মোটরসাইকেল নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। এর আগের দিন বাসে ও নৌকা যোগেও সমাবেশস্থলে চলে গেছেন বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা। সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মী সিলেট সমাবেশে পৌঁছেছেন বলে জানান জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর শওকত।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, আমি তাহিরপুর থেকে এক হাজার মোটর সাইকেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুপুরে রওয়ানা দেই। আমাদের সঙ্গে দিরাই, শান্তিগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর থেকেও আরো হাজারো মোটর সাইকেলে নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এছাড়াও ধর্মপাশা ও মধ্যনগর থেকে প্রায় ২০টি নৌকা করে নৌপথে আগেরদিনও নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন। আগের দিন বাসে করেও সমাবেশ স্থলে পৌঁছে গেছেন অনেকে।
অপরদিকে, সিলেট আলীয়া মাদরাসা মাঠে পূর্ব ঘোষিত গণসমাবেশ সফল করতে শুক্রবার নৌকায় করে ছুটেন অনেক নেতাকর্মী।
বৃহ¯পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়ায় শুক্রবার দুপুর থেকেই সড়ক পথে না গিয়ে জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, দিরাই, শাল্লা, বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকসহ ১২টি উপজেলা থেকে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাক ও বিছানাপত্রসহ ট্রলার নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্য রওনা করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এর আগে বিভিন্ন যানবাহনে সারাদিন ও রাতে সিলেটে পৌঁছেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেওয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল মিয়া জানান, পরিবহন র্ধমঘটের ডাক দেওয়ায় বৃহ¯পতিবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা থেকে কয়েক হাজার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন নেতাকর্মী সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক দলের আহবায়ক ও বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হকের নেতৃত্ব নৌ পথে খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়েছেন। রাতে ট্রলারে থেকেছি। সবাই ট্রলারে থাকা খাওয়া করবো। আমরা সিলেটের কাছে চলে এসেছি।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হক বলেন, সরকারের নির্দেশেই দু’দিনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার আসল উদ্দেশ্যই হল বিএনপির গণসমাবেশ বাধা সৃষ্টি করা। কিন্তু কোনো লাভ হবে না, সব বাধা অতিক্রম করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা সিলেট আলীয়া মাদরাসা মাঠে পৌঁছাচ্ছে। আরও অনেকেই নদী পথে রওয়ানা হয়েছেন। তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা থেকে আমার নেতৃত্বে ৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থক সিলেট এসেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের নামে আমাদের পূর্ব ঘোষিত সমাবেশে বাধার সৃষ্টি করছে সরকার। আ.লীগ সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাবেশে যেতে দিতে চায় না। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন যানবাহনে করে সিলেট চলে গেছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সুনামগঞ্জ থেকে ৮ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে সিলেট রওয়ানা হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, পথে পথে সাধারণ মানুষ আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। পরিবহন ধর্মঘট ডেকেও সরকার আমাদের সমাবেশে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারেনি। নেতাকর্মীরা আরো উজ্জীবিত হয়েছেন।