স্টাফ রিপোর্টার ::
সর্বজন শ্রদ্ধেয় কমরেড প্রসূন কান্তি রায় (বরুণ রায়)-এর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান স¤পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার মুক্তমঞ্চে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
কমরেড বরুণ রায় জন্মশতবর্ষ উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বরুণ রায়ের সহধর্মিণী নারীনেত্রী শীলা রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু, প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, কেন্দ্রীয় গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফৌজিয়া মোসলেম, সিলেট জেলা সিপিবি’র সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বেদনানন্দ ভট্টাচার্য্য, কবি ও লেখক সুখেন্দু সেন, জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য্য, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট হায়দার চৌধুরী লিটন, সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকোট রুহুল তুহিন প্রমুখ।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বরুণ রায় ছিলেন সমগ্র বাংলাদেশের নেতা। তিনি জমিদার পরিবারের হয়েও সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। ভাসানপানির অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইসহ সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এক সাথে কাজ করেছি। রাজনীতিতে ক্ষমতা প্রয়োজন মানুষের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। এখন রাজনীতিতে প্রতারণাটাই বড় বাহাদুরির কাজ হয়ে গেছে। এখন ফুলের বাগান তৈরি হয় না। ক্যাসিনোর বাগান তৈরি হয়। আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বরুণ রায়কে আমাদের বার বার স্মরণ করা উচিত। শুধু দূর থেকে স্মরণ করলেই হবে না। তাঁর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। প্রতিদিনের সংগ্রাম ও কাজের ভেতরে বরুণ রায় প্রেরণার উৎস হয়ে থাকুক। জাতিকে যদি রক্ষা করতে হয়, জাতির অস্তিত্ব রক্ষা করতে হয় তাহলে বরুণ রায়দের স্মরণ করা উচিত। বাংলাদেশ একটা হঠাৎতন্ত্রের দেশ। বঙ্গবন্ধু বলতেন পলিমাটির দেশ বর্ষার সময় নরম মাখনের মতন আর চৈত্রের রোদে শক্ত পাথরের মতো হয়ে যায়। বাংলাদেশে শক্ত পাথরের মতো দিনগুলো অপেক্ষা করে আছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, বরুণ রায়দের মতো নেতাদের কথা বললে রূপকথার গল্প মনে হয়। রাজনীতির ক্ষমতায় থেকেও সমাজকর্মী হয়ে কাজ করছেন। শ্রদ্ধা পেয়েছিলেন গণমানুষের। ক্ষমতার রাজনীতি একদিন হারিয়ে যায়। মানবিক রাজনীতি মানুষের মনে থেকে যায়। তিনি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, বরুণ রায়ের মতো ব্যক্তি শতবর্ষে একজনই জন্মায়। বরুণ শুধু কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন না, তিনি সাধারণ মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি এই শহরে হেঁটে বেড়াতেন। তাঁর কোনো শত্রু ছিলো না। তিনি সুনামগঞ্জকে আলোকিত করে গেছেন। ভাসান পানি আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। আমরা মনে করি সমস্ত লোককে একত্রিত হয়ে সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমরেড বরুণ রায় জন্মশতবর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা উদীচীর সাধারণ স¤পাদক জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ‘বরণীয় বরুণ রায়’ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষক নেতা অমর চাঁন দাস, কমরেড চিত্তরঞ্জন তালুকদার, নির্মল ভট্টাচার্য্য, রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, মানব চৌধুরী, চন্দন রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক সিরাজুর রহমান সিরাজ, সুবীর তালুকদার বাপ্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নুরুল মোমেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মজিদ, আমেরিকা প্রবাসী কবি ও গীতিকার ইশতিয়াক রুপু, সিলেট গণতন্ত্রি পার্টি নেতা জুনেদুর রহমান, সুবিমল চক্রবর্তী চন্দন প্রমুখ।