সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বালুমহাল থেকে উত্তোলিত বালু পরিবহনের কারণে কোনও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা বালু পরিবহনকারী কর্তৃক মেরামত করে দেওয়া বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধানসহ বালুমহাল ব্যবস্থাপনা যুগোপযোগী করতে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’-এর সংশোধনীর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। শনিবার (৫ নভেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন-২০২২’-এর খসড়ায় খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং স্মার্ট বালুমহাল ব্যবস্থাপনায় জোর দেওয়া হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর তারিখে এই আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রস্তাবিত ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন-২০২২’-এর খসড়ায় সংযুক্ত প্রধান প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন উর্বর কৃষি জমি রক্ষা, কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি সংরক্ষণের ব্যবস্থাসহ ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে ওই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমি বা প্রতিবেশের যাতে ক্ষতি সাধন না হয় তার ব্যবস্থা রাখা। এছাড়া, পরিবেশের ক্ষতি সাধিত হয় কিংবা পার্শ্ববর্তী ভূমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের কারণ উদ্ভব হয় এমন কোনও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমি হতেও কোনও বালু বা মাটি উত্তোলন না করার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
ইজারা কার্যক্রম দ্রুত অনলাইনে স¤পাদন, বালু উত্তোলন কার্যক্রম ও পরিমাণ মনিটরিং করার জন্য স্যাটেলাইট ডাটা ব্যাবহার বা সিসি ক্যামেরা স্থাপন বা ৬ মাস পর পর ডিজিটাল সার্ভে করার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে।
সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রয়োজনে বা জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ইজারা বহির্ভূত বালুমহাল ও অন্য এলাকা হতে বালু বা মাটি উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনা, নির্ধারিত নৌপথের বাইরে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ প্রযোজ্য না হওয়া এবং ইজারা বহির্ভূত থাকা বালুমহাল থেকে খাস আদায় পদ্ধতিতে বালু-মাটি উত্তোলনের বিধান এই প্রস্তাবিত আইনে সন্নিবেশ করা হয়েছে।
অসাধু ব্যক্তিদের অপতৎপরতা রোধ করার জন্য যেসব বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ইজারার শর্ত ভঙ্গকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের অবৈধ কর্মকা-ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, অপরাধের সরঞ্জাম বাজেয়াপ্তকরণ ও ক্ষতিপূরণ আদায় ইত্যাদি।
এছাড়া, উত্তোলিত বালু পরিবহনের কারণে কোনও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা বালু পরিবহনকারী কর্তৃক মেরামত করে দেওয়া বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধান এবং ইজারা বহির্ভূত থাকা বালুমহাল থেকে খাস আদায় পদ্ধতিতে বালু-মাটি উত্তোলনের বিধান এই আইনের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন-২০২২’ মন্ত্রিপরিষদে পাস হওয়ার সাথে সাথে এই আইন প্রণয়নের প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ হলো। এখন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাহায্য চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সংসদ সচিবালয়ে জাতীয় সংসদে আইন পাসের জন্য বিল উত্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, বালুমহাল ইজারা প্রদান বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বছরে গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা জমা হয়।