সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় পঞ্চম শ্রেণির পিইসিই ও অষ্টম শ্রেণির জেএসসি এবারও হচ্ছে না। এবারও এসব পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে এ বছর প্রাথমিক পর্যায় শেষে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের কোনো পাবলিক পরীক্ষা হচ্ছে না। বিদ্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে যে তৃতীয় প্রান্তিক বা চূড়ান্ত পরীক্ষা নেবে, সেটার ভিত্তিতেই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মূল্যায়নের একটি অভিন্ন পদ্ধতি ঠিক করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ বছর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঁচটি মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে যার নম্বর ২০। এ পাঁচটি মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল যা আসবে তার ৪০ ভাগের সঙ্গে প্রথম তিনটি মূল্যায়ন পরীক্ষার নম্বর যোগ করে উত্তীর্ণদের মাপকাঠি নির্ধারণ হবে।
প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শারীরিক শিক্ষা, চারু ও কারুকলা ও সঙ্গীত বিষয়ের কোনো মূল্যায়ন পরীক্ষা থাকবে না। তবে সব বিষয়ে মোট নম্বরের উপরে শিক্ষনের অর্জিত মাত্রা ও গুণাবলীর উপর ভিত্তি করে মন্তব্য করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এ প্রাথমিক স্তর থেকে এসএসসি বা মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে কোনো ধরণের পাবলিক পরীক্ষা অর্থাৎ পিইসিই, জেএসসি বা জেডিসি পরীক্ষা গ্রহণ না করার সুপারিশ করা হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ ও পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম শ্রেণির কোনো প্রান্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। তবে প্রবর্তিত ধারাবাহিক মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে প্রতি প্রান্তিকের ফলাফল প্রদান করা হবে।
২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে নতুন বই প্রবর্তন সাপেক্ষে শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা এবং ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের সংমিশ্রণে মূল্যায়ন ব্যবস্থা থাকবে। ২০২৩ সালে ধারাবাহিক মূল্যায়ন প্রবর্তনের আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রচলিত পরীক্ষা তথা মূল্যায়ন পদ্ধতি চলমান থাকবে।
২০২৩ সালের মূল্যায়নের জন্য যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে শোনা, বলা, পড়া এবং লেখার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর দক্ষতা পরিমাপ করতে হবে। পড়া ও লেখার ক্ষেত্রে শ্রেণি পরীক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা পরিমাপ করতে হবে। শিক্ষক বিদ্যালয় খোলার তারিখ থেকে যতগুলো শ্রেণি পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন, তার মধ্যে শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া পাঁচটি পরীক্ষার নম্বর গণনা করবেন। প্রত্যেকটি শ্রেণি পরীক্ষায় ২০ নম্বরের উপর পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
গণিত বিষয়ে গাণিতিক ধারণা, প্রক্রিয়াগত ধারণা এবং সমস্যা সমাধানের উপর লিখিত শ্রেণি পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরণের পরিমাপ শিক্ষকগণ এতদিন করে এসেছেন। শিক্ষক বিদ্যালয় খোলার তারিখ থেকে যতগুলো শ্রেণি পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ৫টি পরীক্ষার নম্বর গণনা করবেন। প্রত্যেকটি শ্রেণি পরীক্ষায় ২০ নম্বরের উপর পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। একইভাবে নম্বর গণনা করা হবে বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং অন্যান্য বিষয়সমূহে।
প্রত্যেকটি বিষয়ের শ্রেণি পরীক্ষাসমূহের পাঁচটি পরীক্ষার মোট নম্বরের ৪০ শতাংশ এবং বাকি ৬০ নম্বরের উপর তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এ শ্রেণি পরীক্ষাসমূহ ও তৃতীয় প্রান্তিকের পরীক্ষার নম্বর যোগ করে ২০২২ এর শিক্ষার্থীর অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হবে। বাংলাদেশের সকল বিদ্যালয়ে এ পরীক্ষা একটি সুনির্দিষ্ট তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার্থীর অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রণয়ন করার পর প্রত্যেক বিদ্যালয় তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ের ফলাফল ঘোষণা করবেন এবং শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নিকট এই ফলাফল তুলে দেবেন। শিক্ষার্থীর এই শিখন অগ্রগতির সমন্বিত রেকর্ড প্রত্যেক বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।