বিশেষ প্রতিনিধি ::
দ্বন্দ-কোন্দল ও দলীয় বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। এই অবস্থায় সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন আগামী ৩০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্নের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আগে ২০ নভেম্বরের মধ্যে উপজেলার সম্মেলনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত এই নেতার নির্দেশনা পেয়ে দীর্ঘদিন পর সুনামগঞ্জে আসছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান। এদিকে উপজেলা ও জেলায় সম্ভাব্য সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছেন। তারা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতৃত্ব পেতে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন কেন্দ্র ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের। তাদের হয়ে কর্মীরাও একই কাজ করছেন।
২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় দেড় যুগ পর উৎসবমুখর পরিবেশে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের নাম ঘোষণা করা হয়। ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই বিভক্ত হয়ে নেতৃবৃন্দ দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছেন।
এদিকে সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার পর রাজপথের সক্রিয়, নির্যাতিত, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের দাবি ওঠেছে। তাদেরকে নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে আগামীর কঠিন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কর্মীরা। যারা দল ক্ষমতায় থাকায় ও ক্ষমতার বাইরে থাকাকালীন নানাভাবে নির্যাতিত ও বঞ্চিত হয়েছেন তাদেরকে মিটিতে সুযোগ দিলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন তারা।
ছাত্রলীগ নেতা শাহ জোনায়েদ আহমদ সৃজন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রকৃত রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করেন ও জাতির জনকের প্রতি আস্থাশীল অনেক বঞ্চিত ও নির্যাতিত নেতা সুনামগঞ্জে আছেন। যারা নেতৃত্ব দেওয়ার সকল যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু নানা কারণে তারা বঞ্চিতই নয়, নির্যাতিতও হচ্ছেন। তাদেরকে কমিটিতে সুযোগ দিলে শক্তিশালী হবে আওয়ামী লীগ।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট বুরহান উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য আগামী দিন কঠিন আসছে। এখন সুযোগ এসেছে হাইব্রিড, আওয়ামী লীগের আদর্শবিরোধীদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের সুযোগ দেবার। এতে দল শক্তিশালী হবে। আদর্শিক লড়াইয়ে রাজপথ ছেড়ে যাবেনা ত্যাগীরা।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জিপি এডভোকেট আক্তারুজ্জামান সেলিম বলেন, আমরা জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। তিনি দেশে আসার পর যারা ছাত্রলীগকে বিভক্তি করেছিল আমরা তখন নেতৃত্বের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিলাম। আজকের পরীক্ষিত সেই কর্মীরা হারিয়ে গেছেন। কেউ তাদের খোঁজ রাখে না। এবার তাদের খুঁজে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দিলে তৃণমূল উজ্জীবিত হবে। সংগঠনও আদর্শিকভাবে শক্তিশালী হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান বলেন, আমাদেরকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করতে বলা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভার সম্মেলন করে জেলা সম্মেলন সম্পন্ন করার। এ লক্ষ্যে আমি সুনামগঞ্জে এসে নেতাকর্মীদের নিয়ে বসবো। তাছাড়া সম্মেলনের মাধ্যমেই এবার নেতৃত্ব বাছাই করা হবে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক স¤পাদক আহমদ হোসেন জানান, আমার বিভাগে একটি ছাড়া বাকি সব জেলার সম্মেলন হয়েছে। বাকি থাকা সুনামগঞ্জ জেলার সম্মেলন নভেম্বরে করে ফেলব। এছাড়া উপজেলা-থানা ও পৌর কমিটির সম্মেলনের কাজও শেষ করে ফেলব।