বাংলাদেশের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং তার তা-বনৃত্য করে চলে গেছে। কিন্তু তার এই তা-বনৃত্যসঞ্জাত বিপর্যয়ের বয়ার্ণনা এই সম্পদকীয়র বিষয় নয়, বিষয়টি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস সংক্রান্ত বিভ্রান্তি বা ব্যর্থতা সংক্রান্ত। সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে যে, সিত্রাংয়ের আঘাত হানার সময় ও দিক নির্ণয়সংক্রান্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস প্রদানে বিভ্রান্তি ছিল, অর্থাৎ যথাযথ অর্থে ঠিক ছিল না।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এবং দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসে বিভ্রান্তি ঘটার বিষয়ে জানতে চেয়েচিলেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে, আবহাওয়াবিদ্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়ার আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জনবল কম আছে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে এমন ভুল থেকে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।’
আমরা তাঁর সঙ্গে একমত এবং আমরা মনে করি এই বিষয়টি অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়া কিংবা বিপর্যয় সংঘটিত হওয়ার সমস্যাটি কোনও বিবেচনায়ই উপেক্ষণীয় কীছু নয়। ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড় থেকে ‘বড় বিপর্যয় ঘটা’কে প্রতিহত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাধান্য দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধি ও তাঁদেরকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ করে তুলার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ভুলে গেলে চলবে না, পদ্মাসেতু তৈরি করে জাতিকে আর্থনীতিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে যে-সমৃদ্ধিকে অর্জন করা হবে, সে-অর্জনকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে বিনষ্ট হওয়ার জন্যে উৎসর্গিত করা নিতান্তই অর্থহীন।