মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সরল বিশ^াসে (গুড ফেইথ) করা কোনো কাজের জন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন না। এইমর্মে বিটিআরসির পক্ষ থেকে অতিসম্প্রতি রেগুলেশন ফর ডিজিটাল অ্যান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মস, ২০২১ শীর্ষক প্রবিধানের চূড়ান্ত খসড়া হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। এবংবিধ সংবাদ সম্প্রচার হয়েছে গণমাধ্যমে। অভিজ্ঞমহলের অভিমত এই যে, এই দায়মুক্তি জাতীয় আইন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীদেরকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত করবে, যা দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ সংবিধানে দেশের সকল মানুষের সমতা ও আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার রয়েছে। অথচ আইন করা হবে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ হরণের নিশ্চয়তা বিধান করে এবং তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাগণ সংবিধান স্বীকৃত মানুষের সমতার নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষের চেয়ে ঊর্ধ্বতন মর্যাদা অর্জন করবেন। এমনটা হতে পারে না।
আমরা মনে করি, এমন আইন পাস করা হলে ‘সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সে-হত্যাকা-ের বিচার চেয়ে মামলা করা যাবে না’র মতো একটি কালো আইন প্রবর্তন করা হবে। তাই এই আইন পাস করার আগে মানবিকতার নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেÑ ক্ষতিপূরণের দায় (সে-টা সরল বিশ্বাসে হলেও) ভোগ করাকে পরিহার না করে আইন প্রণয়ন করা হোক। তাছাড়া এবংবিধ আইন পাস করা হলে ‘গরল বিশ্বাস’কেও ‘সরল বিশ্বাস’ বলে চালিয়ে দেওয়াকে প্রহিত করা যাবে না এবং প্রকারান্তরে আমলাতান্ত্রিকতার অভ্যন্তরে দুর্নীতি বাড়বে বই কমবে না।