মো. শাহজাহান মিয়া ::
একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত হয়েছে জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত জগন্নাথপুর উপজেলা। এ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার ৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৫ হাজার ৩২৩ ও নারী ভোটার ৯৩ হাজার ৭১৬ জন। ৮৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে আগামী ২ নভেম্বর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথমে সাদামাটা থাকলেও ভোটের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে, ততোই জমে উঠছে নির্বাচনী আমেজ। শেষ সময়ে এসে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও প্রচার-প্রচারণায় রীতিমতো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। পোস্টারে পোস্টারে পুরো উপজেলা ছেয়ে গেলেও সোমবারের বৃষ্টিতে সব পোস্টার ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে ভিজেও নিজেদের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষ্যে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা সুদূর প্রবাসে থেকেও তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা তাদের পরিবারসহ স্বজনদের বলে দিচ্ছেন পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে। প্রবাসী অধ্যূষিত উপজেলা হওয়ায় প্রতিটি নির্বাচনে প্রবাসীদের বড় ধরনের প্রভাব থাকে। তাই প্রার্থীরাও প্রবাসীদের মন জয় করতে মরিয়া হয়ে উঠেন।
এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ সহ ৩টি পদের বিপরীতে মোট ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আকমল হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আতাউর রহমান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, জমিয়তে উলামায়ে মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম ও জাতীয় পার্টি পরিচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রার্থী আব্বাস চৌধুরী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সালেহ আহমদ, বিএনপি পরিচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুল মতিন লাকি, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন লালন ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ তুহেল মিয়া। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ.লীগ নেত্রী সুফিয়া খানম সাথী, রিনা বেগম ও সেলিনা বেগম।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চতুর্মুখী লড়াই এখন তুঙ্গে রয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তাদের হারানো চেয়ারম্যান পদটি পুনরায় উদ্ধার করতে চায়। আর বিএনপি চেয়ারম্যান পদটি ধরে রাখতে চায়। তবে জমিয়ত এবার নতুন করে ভোটের ভাগ বসাবে। একই সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান পদেও চতুর্মুখী এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দ্বিমুখি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সব মিলিয়ে শেষ সময়ে এসে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলাতে প্রার্থী ও ভোটারসহ সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী কলা-কৌশলে যারা এগিয়ে রয়েছেন, তাদের বিজয় সহজ হবে। তা না হলে ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।