স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতুর ওপর বহাল তবিয়তেই রয়েছে ‘মোটর সাইকেল স্ট্যান্ড’। সম্প্রতি প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে সিএনজি চালকরা সেতু এলাকা থেকে সরে গেলেও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রী পরিবহন করছেন সেতু থেকেই। তারা সেতুর ওপরে গড়ে তুলেছেন মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড।
শহরের মল্লিকপুর এলাকার আব্দুজ জহুর সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে থাকেন। জেলার চার উপজেলা তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার মানুষ এই সেতু দিয়ে জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। কিন্তু এই সেতুর উপর শুরু থেকেই ছিল অস্থায়ী সিএনজি স্ট্যান্ড। সিএনজি স্ট্যান্ড থাকায় এই সেতুর অ্যাপ্রোচে সবসময় যানজট লেগে থাকতো। সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেতুর উপর থেকে সিএনজি স্ট্যান্ড তুলে নেয় মালিক সমিতি। কিন্তু সিএনজি স্ট্যান্ড তুলে নিলেও এখন নতুন করে আবারো বসেছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকসা স্ট্যান্ড। সিএনজি স্ট্যান্ড উঠিয়ে যাওয়ার পর ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিএনজি মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে। এছাড়াও সেতুর অ্যাপ্রোচ মুখে ব্যাটারি চালিত অটোরিকসা ও মোটরসাইকেলের অবাধ অবস্থান থাকার কারণে সেতু এলাকায় যানজট লেগে থাকে।
টুকের বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বাছির বলেন, এতো সুন্দর একটা সেতু এখানে বিকেল হলেই আমরা ঘুরতে আসি। ক’দিন আগে সিএনজি স্ট্যান্ড ছিলো তা বন্ধ হওয়ার পর এখন এসেছে মোটরসাইকেল। এতে করে আমাদের এই সুন্দর সেতুর প্রবেশপথে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। একই সাথে সেতুটির সৌন্দর্য্যহানি হচ্ছে।
সিএনজি চালক সমছু মিয়া বলেন, আমরা সেতুতে আগে ছিলাম। প্রশাসন থেকে বলা মাত্রই আমরা সরে এসেছি। এখন মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসছে। আইন কি শুধু আমরার লাগি?
সরজমিনে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় সেতু এলাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেরা ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই মোটরসাইকেলে করে যাত্রী আনা-নেয়া করছে। ভাড়া নিয়ে চালকদের সাথে যাত্রীদের ঝগড়ার দৃশ্যও চোখে পড়ে।
মোটরসাইকেল চালকরা বলছেন, তাদের নির্ধারিত মোটরসাইকেল রাখার জায়গা সেতুর পশ্চিম পাড়ে। শহর থেকে সেতুর পশ্চিম পাড় অনেক দূরে হওয়ায় কোনো যাত্রী পান না তারা। তাই তারা সেতুর ওপরে অবস্থান করেন।
মোটরসাইকেল চালক জুবের আহমদ বলেন, আমরা সেতুর পশ্চিমে থাকলে যাত্রী পাব না। তাই সেতুর ওপরে অবস্থান নিয়েছি।
সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছুরত আলী বলেন, সেতুর উপরে থেকে আমরারে সরানো হইছে। কিন্তু এখন আবার দেখা যায় মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বইছে। আমরাতো আইনের প্রতি সম্মান দেখাইছি। তবে এখন আবার যদি মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসানো হইলো তাইলে সমান অধিকার দেয়া হইলো কেমনে?
সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ স¤পাদক রুনু মিয়া বলেন, আমরা আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রশাসন বলার সাথে সাথে সেতুর উপর থেকে নেমে এসেছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে আমাদেরকে সরিয়ে আবারো এখানে মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড বসেছে। তিনি বলেন, যদি মোটরসাইকেল স্ট্যান্ডই বসে তাহলে সেতু কিভাবে পরিষ্কার হলো।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, সেতুর প্রবেশমুখে যাতে কোন প্রকার যানবাহন না থাকে, সেজন্য আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি রাখছি। তিনি বলেন, যে কোন যানবাহন এখানে থাকলেই আমরা মামলা দিচ্ছি।