স্টাফ রিপোর্টার ::
দেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণাধীন অবকাঠামো স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। সেতুটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একযোগে সারাদেশে দেখানো হবে। একইসাথে সুনামগঞ্জসহ দেশের ৬৪ জেলা উৎসবে মাতবে এই দিনে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হবে।
এ উপলক্ষে বৃহ¯পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, দেশের বৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে উদযাপনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২৫ জুন সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ব্যানার, ফেস্টুনসহ একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হবে। তিন দিনব্যাপি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান হবে। কর্মসূচিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করা হবে। অনুষ্ঠান একযোগে প্রত্যেক উপজেলায় হবে এবং জেলার ৮৮ ইউনিয়নে মাল্টি মিডিয়ার মাধ্যমে দেখানো হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাজনীতি ও বিচক্ষণতার ফসল আজকের এই পদ্মাসেতু। স্বাধীনতার পরে যদি মাথা উঁচু করে কিছু বলতে হয়, সেটা হচ্ছে পদ্মা সেতু। এটা শুধু কোনো অঞ্চলের জন্য না, সারা বাংলাদেশের জন্য উন্নয়ন। পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা, বাণিজ্যে নতুন দ্বার উন্মোচিত হল। এতে দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও অর্থনীতিতে যোগ হল নয়া মাত্রা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অসীম চন্দ্র বণিকের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিডিএলজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল হালিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম, আরডিসি এ এস এম রেজাউল করিম, ডিআরও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. আফতাব উদ্দিন, যুগ্ম স¤পাদক অ্যাড. হায়দার চৌধুরী লিটন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম, সাধারণ স¤পাদক মোবারক হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ স¤পাদক অ্যাড. মতিউর রহমান পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল মোমেন, সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি খন্দকার মঞ্জুর আহমদ, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু প্রমুখ।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দুই প্রান্তের উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী-২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। বাকি টুকটাক কাজও ১৫ জুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রতিদিন সেতুতে আট হাজারের বেশি গাড়ি চলাচল করবে বলে সমীক্ষায় বলা হয়েছে।