দেশবরেণ্য সাংবাদিক, সুনামগঞ্জের কৃতী সন্তান পীর হাবিব আমাদের মাঝে নেই – বিষয়টি ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে। শনিবার বিকেলে দুঃসংবাদটি যখন শুনলাম, তখন নিজেকে কিছুতেই সামলে রাখতে পারছিলাম না। চোখের কোণে জল জমা হতে লাগলো একটু একটু করে। তখন মনে হলো- জীবন এতো ছোট কেন? এই দেশকে আরও অনেক কিছু দেয়ার ছিল একজন পীর হাবিবের। এভাবে চলে যাওয়াতো কিছুতেই ঠিক হয়নি। বড্ড অসময়ে কেন প্রিয় মানুষগুলোকে চলে যেতে হয়?
‘ফেসবুককেন্দ্রিক আবেগে’ আমি গা ভাসানো একদমই বেমানান লাগে। ‘মেকি’ ভালবাসা আর শ্রদ্ধা জানানো থেকে বরাবরই নিজেকে দূরে রাখি। মনের মধ্যে যে ভালোবাসা তার প্রকাশ হয় অবচেতন মনে, তা প্রচারের প্রয়োজন হয় না। এই মুহূর্তে স্নেহের হাবিবকে নিয়ে যতই লেখার চেষ্টা করছি, বার বার কলম থেমে যাচ্ছে। কী অনন্য সাধারণ মানুষ ছিল! কী ক্ষুরধার লেখনি তাঁর! তাঁর সাহসী লেখনি আমাকে প্রাণিত করতো।
অনেকেই বড় শহরে গেলে সুনামগঞ্জকে ভুলে যায়, সুনামগঞ্জের মানুষকে ভুলে যায়। কিন্তু পীর হাবিব ছিল এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। সে কখনো সুনামগঞ্জকে ভুলে যায়নি। এই সুনামগঞ্জবাসীর জন্য তাঁর ছিল আলাদা মায়া, আত্মার টান। এ জন্যই তো সুনামগঞ্জবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে সে সব সময় সোচ্চার ছিল। বিগত সময়ে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ বিষয়ে পীর হাবিব সাহসী ভূমিকা রেখেছিল। ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে অনেক কিছুই তুলে ধরেছিল। অনেকের মুখোশ উন্মোচিত করেছিল। পীর হাবিব সাহসী লেখনির অনেক অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। হয়তো অনেক সাংবাদিক সৃষ্টি হবে কিন্তু একজন পীর হাবিবের শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। না ফেরার দেশে ভালো থেকো আমাদের স্বজন, আমাদের প্রিয়জন পীর হাবিব।