করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় আর লকডাউন নয়, মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রেখে কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে এসব বিধি-নিষেধ মানছেন না অনেকেই। বলতে গেলে, প্রতিযোগিতা দিয়ে চলছে বিধিভাঙার তৎপরতা। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন মাঠে নেমেছে। জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি, বিধি অমান্যকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে। তবে যতই অভিযান পরিচালনা হোক না কেন, জনগণ সচেতন না হলে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
ইউরোপের দেশগুলোতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে চলছে করোনার চতুর্থ ঢেউ। এরই মধ্যে শনাক্ত হয় ওমিক্রন। গত বছর অক্টোবরেও ভারতে নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছিল। ‘ডেল্টা’ নামের ওই ধরন অতি দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমাদের দেশে সরকারের সতর্কতায় এটি নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাংলাদেশের মতো অর্থনীতির দেশে করোনার মতো দীর্ঘস্থায়ী মহামারি মোকাবিলা করা সহজ কাজ নয়। একদিকে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত, অন্যদিকে জীবিকা রক্ষার চেষ্টা করা- সব মিলিয়ে যে কোনো সরকারের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এরপরও আমরা বড় ট্র্যাজেডি এড়াতে পেরেছি। কারণ অনেক দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। আমরা এ পর্যন্ত সংক্রমণ মোকাবিলায় অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো করেছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনার নতুন ধরনটি নিয়ে এ পর্যন্ত মূল্যায়নে দেখা যায় আগের ধরনগুলোর চেয়ে নতুন ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুততর। এর অর্থ হচ্ছে নতুন ধরনের মাধ্যমে সংক্রমণ ব্যাপক হওয়ার আশঙ্কা আছে। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, ভিড় এড়িয়ে চলার পাশাপাশি টিকা নেয়া অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে যে উদাসীনতা তৈরি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বেশি আতঙ্কিত না হয়ে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।