আমাদের দেশে কয়েকটি চিহ্নিত রাজনৈতিক দল এবং এর কিছু নেতা আছেন যারা বাইরে এক আর ভেতরে আরেক। মুখে দেশ ও জনগণের কল্যাণের কথা বললেও অন্তরে থাকে অন্যকিছু। তার বাস্তব প্রমাণ একে একে দেখতে পাচ্ছেন দেশবাসী। প্রকৃত অর্থে চিহ্নিত রাজনৈতিক গোষ্ঠীর আসল উদ্দেশ্য হল- রাষ্ট্রক্ষমতা যেকোনোভাবে হোক দখল করতে হবে। এজন্য তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতেও পিছ পা হয় না।
বর্তমানে দেশে অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু ‘আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ’। অভিযোগ উঠেছে লবিস্টের পেছনে ৪০ লাখ ডলারের বেশি খরচ করেছে বিএনপি-জামায়াত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করছে। তারা লবিস্ট নিয়োগে ৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। ড. মোমেন বলেন, আমরা বলতে চাই বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগের হিসাব নিকাশ দেখিয়েছে কিনা। এই টাকা কিভাবে বিদেশে পাঠালো। ট্যাক্স দিয়েছে কিনা। এসব আমাদের জানার বিষয়। তিনি বলেন, বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বলেছে, বাংলাদেশে কোনো সহায়তা দেবেন না। ভাসানচর গেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা বিঘিœত হবে। বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের কাছে ১৮টি চিঠি দিয়েছে। এসব চিঠিতে অসত্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। এসব মানুষকে এসব জানানো দরকার।
আমরা জানি, ব্যবসার জন্য ও রাজনৈতিক কারণে বিদেশে অনেকেই লবিস্ট নিয়োগ করেন। কিন্তু অন্য কোনো দেশের বিরোধীদল দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে না।
আমরা দেখতে পাচ্ছি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ষড়যন্ত্রকারীদের অপতৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্রীয় মসনদে বসতে নানা পাঁয়তারা করছে। তাদের এই অপতৎপরতা শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলবে – এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কারণে বিগত সময়ে আমরা দেখেছি যারা মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলেন তারা কতো হিং¯্র হতে পারে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে তাদের তা-বলীলা দেশবাসী কখনোই ভুলে যাবে না।
একটি দেশের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে দেশ সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাবে। একথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে তা আর কেউ করতে পারেনি। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সবক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কালক্রমে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেলে পরিণত হয়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ক্রম উন্নতি হচ্ছেই। আর এই জায়গায় গুটি কয়েক রাজনৈতিক দলের গাত্রদাহ। তারা যা পারেনি, তারা যা পারে না অথবা তাদের দ্বারা যা কখনোই সম্ভব নয়, তাই করে দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই ‘লবিস্ট’দের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে চিহ্নিত গোষ্ঠী। তারা আসলে কখনোই বাংলাদেশ চায়নি। তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী। এজন্যই দেশকে পিছিয়ে দিতে একের পর এক ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, গুজব চালিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে, অপতৎপরতা বন্ধ করতে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে- পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী, সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে কখনো বাংলাদেশ নিরাপদ থাকতে পারে না, বাংলাদেশের জনগণ নিরাপদ থাকতে পারে না।