আশিস রহমান ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার মানুষের চলাচলের জন্য তিন স্থানে আছে তিনটি খেয়াঘাট। আজমপুর ঘাট থেকে দোয়ারাবাজার, দোহালিয়ার জঙ্গলশ্রী থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলা খেয়াঘাট ও আমবাড়ি বাজার থেকে আদারবাজার খেয়াঘাট। এই তিনটি খেয়াঘাট দিয়ে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিনিয়ত লেখাপড়া, সরকারি বেসরকারি/চাকরি, অফিস/আদালত, চিকিৎসা সেবা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে সুরমা নদী পার হয়ে উপজেলা সদর ও জেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব খেয়াঘাটে দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীছাউনি ও সিঁড়ি না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। খেয়াঘাটগুলো যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটেছে দুর্ঘটনা।
দোয়ারাবাজার থেকে আজমপুর খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, খেয়াঘাটের একমাত্র যাত্রী ছাউনির সিঁড়ি ভেঙে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে কয়েক বছর ধরে। সিঁড়ি মেরামত না থাকায় নদীর পাড়ের উচুঁ ঢালু পথ বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করছেন লোকজন। খেয়া নৌকায় মালামাল ও মোটরবাইক ওঠানামা করতে চরম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রীরা। গর্ভবতী নারী, শিশু, বৃদ্ধা ও রোগীদের খেয়াঘাটে ওঠানামা করতে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, এসব খেয়া নৌকায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক মোটরবাইক পারাপার হয়। প্রতিবছর খেয়াঘাট ইজারা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা রাজস্ব পাচ্ছে সরকার। অথচ যাত্রী ভোগান্তি কমিয়ে আনতে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছেনা। যাত্রীছাউনি এবং খেয়া নৌকা পাড়ে ভেড়ানোর সিঁড়িঘাট না থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই। তিন খেয়াঘাটের ছয় পাড়ে মাটি কেটে যানবাহন ও যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢালু এ খেয়াঘাট দিয়ে ওঠানামা করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকালে পুরো মাটির পথ কাদায় পিচ্ছিল হয়ে স¤পূর্ণভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। যাত্রী ছাউনি না থাকায় গ্রীষ্মের গরমের দিনে ও বর্ষাকালে বৃষ্টির সময় সামান্য বসে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গাটুকু পাওয়া যায় না।
যাত্রী কানন চন্দ্র দাশ জিপু বলেন, উপজেলায় চাকরির সুবাদে এই খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন আসা যাওয়া করতে হয়। এদিকে আসা যাওয়া করতে খুব ভয় হয়। যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এদিক দিয়ে আসি। বর্ষাকালে একেবারে বিপজ্জনক অবস্থা থাকে। সরকারিভাবে এখানে একটি যাত্রী ছাউনি ও সিঁড়ি ঘাট নির্মাণ করে দিলে সবাই উপকৃত হবে।
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, এসব খেয়াঘাট জেলা পরিষদ কর্তৃক ইজারা দেওয়া হয়ে থাকে। জেলা পরিষদই মূলত এসব দেখভাল করে থাকেন। আমরা জেলা পরিষদকে অনুরোধ জানাবো যাতে যাত্রী ছাউনি ও সিঁড়িঘাট নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে তাদেরকে লিখিতভাবে জানাবো।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট জানান, আমার জেলা পরিষদের দায়িত্বের সময় এখন শেষ পর্যায়ে। নতুনভাবে দায়িত্ব পেলে সবকটি খেয়াঘাটে যাত্রী ছাউনি ও সিঁড়িঘাট নির্মাণ করে দেওয়া হবে।