স্টাফ রিপোর্টার ::
বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান স্মরণে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন অংশ নেন। মতিউর রহমানের জীবন সংক্ষেপ নিয়ে একটি ‘জেগে থাকো, সাহসে, প্রেরণায়’ শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখতের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট এনাম আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের বন্ধু লেখক সুখেন্দু সেন।
শোকসভায় বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ সাদিক, শীলা রায়, শিক্ষাবিদ প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, অ্যাডভোকেট আবু আলী সাজ্জাদ হোসাইন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, অ্যাড. শহীদুজ্জামান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নীলিমা চন্দ, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পীর মতিউর রহমান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুর রহমান সিরাজ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আইনুল ইসলাম বাবলু, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল আবেদিন, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাদির আহমদ, জেলা পরিষদ সদস্য ফৌজিআরা শাম্মি, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক রুহুল তুহিন, সহকারী অধ্যাপক শাহ আবু নাসের, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রনি, মাহবুবুর রহমান জনি প্রমুখ।
অতিথিবৃন্দ বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন এবং তাঁর পরিবারের হাতে শোক স্মারক তুলে দেন।
নাগরিক শোকসভায় বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তার স্পষ্টবাদিতা, সততা ও আদর্শের জন্য বেঁচে থাকবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব নতুন প্রজন্মকে সবসময় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। বক্তারা বলেন, তিনি জীবন বাজি রেখে মুুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেই থেমে থাকেননি। দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। লেখালেখির মাধ্যমে তিনি নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অম্লান চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ট্রাস্টের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক রক্ষার চেষ্টা করেছেন। এসব কারণে তিনি আমাদের মাঝে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। বক্তারা তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে তৎপর ছিলেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বহু আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। তিনি বহু প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে গিয়ে নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি লেখক হিসেবে সক্রিয় ছিলেন তিনি। মতিউর রহমান ছিলেন একজন আদর্শিক মানুষ। রাজনৈতিক জীবনে তিনি কোন সময় ব্যক্তিগত স্বার্থে নিজেকে বিসর্জন দেননি।
শোকসভায় বক্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে পৌর এলাকার লঞ্চঘাট সড়ক থেকে মতিউর রহমানের বাসার সামনের সড়ককে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের নামে নামকরণ করার দাবি জানান। এ সময় পৌর মেয়র নাদের বখত ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের নামে রেজুলেশন আকারে সড়কের নামকরণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন।