স্টাফ রিপোর্র্টার ::
“আমি নির্বাচিত হয়ে ফজলুর রহমানকে কোনও সুযোগ-সুবিধা দেই নাই। উনি আমার কাছে কোনও ফ্যাক্টর নয়, ফ্যাক্টর হচ্ছেন (বিএনপির) শামসুল হক নমু। তিনি ভোটে এসেছেন নমুকে সাহায্য করতে। দুইপাশে ডানে-বামে ভূত হিসেবে। আমার কাছে কিন্তু ভূত ছাড়ানোর হাতিয়ার আছে। ঘোড়ার দুটি চাবুক হাঁকিয়ে দেব। চাবুক লাগালে সব ভূত ছেড়ে যাবে। আর যদি কেউ আমার কর্মীদের উপর আক্রমণ করে তবে চাবুক আরো আটটি বাড়িয়ে ১০টি করবো। বাজারের গলিতে তাদের উপর চাবুক হাঁকাব।”
দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংহপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিন আহমদ কর্তৃক দলীয় বিদ্রোহী ও বর্তমান ইউপি সদস্য ফজলুর রহমানকে উদ্দেশ করে দেওয়া এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সম্প্রতি ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁওয়ে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে চাবুকপেটা করার ঘোষণা দিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী নূর উদ্দিন আরও বলেন, “যত বড় ব্যাটা হোক, নরসিংহপুরে নূর উদ্দিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পার পেয়ে যাবে, সম্ভব নয়। তুমি যত বড় নেতা হও, তোমাকে আমি কিছুই মনে করি না। তুমি ‘নো’। তোমার পরিবার আমার কাছে কিছু নয়। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগেও তোমার শক্তি দেখেছি। আজকে তোমাকে কান ধরে টেনে নিয়ে আসতে পারব।”
এ পর্যায়ে এসে তার উস্কানিমূলক বক্তৃতায় উত্তেজিত সমর্থকরা নৌকা নৌকা বলে উচ্চস্বরে স্লোগান শুরু করেন। স্লোগানের কারণে পরবর্তী ৪০ সেকেন্ডের বক্তব্য শোনা যায়নি।
উত্তেজনার রেশের মধ্যেই তিনি বলেন, “গলা উঁচু কর আপনারা আমার পক্ষে কাজ করবেন। যদি কোনও বাধা আসে সাথে সাথে প্রতিবাদ করব। আমি ওয়াদা করে গেলাম, এমন মায়ের পুত নাই আমার কর্মীদের কিছু করে। এই পরিবারের চাচা-ভাতিজা মিলে —(অস্পষ্ট) বিক্রি করেছে। এই পার্টি ওই পার্টি করছে। আমি চেয়ারম্যান না হলেও তাদের শাসাতে পারব।”
এ ব্যাপারে নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুর রহমান বলেন, “চেয়ারম্যান নূর উদ্দিন আমাকে ও আমার নেতাকর্মীদের চাবুকপেটা করার হুমকি দিয়েছেন। এতে আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নির্বাচনী ব্যস্ততা ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে থানায় যেতে পারিনি। শীঘ্রই থানায় সাধারণ ডায়েরি করব।”
তিনি বলেন, “আমি দুর্নীতিবাজ না। তিনি নিজেই দুর্নীতির কারণে জেলহাজত খেটেছেন।”
অভিযোগের ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারম্যান ও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিন আহমদ বলেন, “আমি বলেছি আমার কর্মীরে পিটাইলে, ডাবল চাবুক দিয়া পিটানির লাগি। প্রতিপক্ষ ভোটের বেনিফিটের জন্য অনেককিছু কইবে, ইটায় কোনও বিনিফিট আইত নায়।”
নরসিংহপুর ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আাব্দুল কাহির বলেন, “এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে সব প্রার্থীদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তবে এটা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।”