1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা : ৮৪ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১

শহীদনূর আহমেদ ::
বুকভরা আশা নিয়ে এইচএসসি পাস করে উচ্চশিক্ষা অর্জনে ডিগ্রি পাস কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। ডিগ্রি পাস করে পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে ধরবেন হাল। সকল আশায় এখন গুড়েবালি। পরীক্ষার সময় কাছাকাছি চলে আসলে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন ভর্তি হতে না পারায় আসন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তারা। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন ও ভর্তি-সেশন ফি জমা দিলেও ক্লাস করার দেড়বছর পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় কলেজের আসন সংকটের কারণে ভর্তি হতে পারেননি ৮৪ শিক্ষার্থী।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট সরকারি কলেজে ঘটনাটি ঘটেছে। কলেজে ভর্তি না হওয়ায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা না থাকায় শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন কলেজের ২০১৯-২০২০ইং শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রি ১ম বর্ষের ৮৪জন শিক্ষার্থী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রাপ্ত আসন নির্দিষ্ট করা থাকলেও অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তি করাকে কলেজ কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও দায়িত্বহীনতা বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহল।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট সরকারি কলেজের জন্য ২০১৮ সালে বিএসএস ২০০টি ও বিএ ৬০টি আসনের অনুমতি প্রদান করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন থাকলেও ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে কলেজে কর্তৃপক্ষ প্রায় সাড়ে ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে ২০১৯-২০২০ইং শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রি পাস কোর্স (বিএসএস/বিএ) ভর্তি করে। যাদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফিসহ অন্যান্য ফি বাবত ৩ হাজার ২০০ টাকা গ্রহণ করা হয়। ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্নের পর একই বছরের ২ ডিসেম্বর আসন বৃদ্ধির জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরে আবেদন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কোনো সাড়া না পেয়ে স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সুপারিশপত্র নিয়ে কলেজের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পুনরায় আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কলেজের আসন ও শিক্ষার্থীদের জিপিএ বিবেচনায় ২৪৮জন শিক্ষার্থীকে রোল নাম্বার অন্তর্ভুক্ত করে ভর্তি নিশ্চিত করলেও বাকি ৮৪ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। যারা ২০২১ সালে ডিগ্রি ১ম বর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
এক বছর পূর্বে কলেজের ডিগ্রি পাস কোর্সের আসন নিশ্চিত হলেও এক বছর পর কি কারণে ভর্তির নামে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর আবেদন গ্রহণ করা হলো, কিসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি আদায় করা হলো এমন অনেক প্রশ্ন করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এদিকে অভিযোগের তীর উঠেছে বাদাঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জুনাব আলীর দিকে।
নাজমুস সাকিব নামে ভর্তিবঞ্চিত এক শিক্ষার্থী বলেন, দেড় বছর আগে আমরা ভর্তি এবং সেশন ফি জমা দিয়েছি। এখন আমাদের বলা হচ্ছে আমাদের রোল আসেনি, আমরা নাকি ভর্তি হইনি। কারণ জানতে অধ্যক্ষ স্যার জানিয়েছেন কলেজে আসন না থাকার কারণে ভর্তি হওয়া যায়নি। কলেজে আসন নেই তাহলে তারা আমাদের কাছ থেকে কেনও ভর্তি আবেদন নিল। কিসের ভিত্তিতে আমাদের কাছ থেকে তারা টাকা আদায় করলো। আমাদের আগে জানালেতো আমরা অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারতাম।
নুরেসা নামে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বিএ পাস করে চাকরিবাকরি করে সংসারের হাল ধরবো। করোনায় দেড় বছর কেটে গেল। এখন কলেজ থেকে বলা হচ্ছে এ বছর আমরা ভর্তি হতে পারবো না। আগামী বছর ভর্তি হতে পারবো কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় আছি। আমরা চাই আসন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে। আমাদের এতো বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
হোসেন আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, আমরা গ্রামে বসবাস করি। অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছি। এখন কলেজের দায়িত্বহীনতার কারণে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এর দায় কে নিবে?
বাদাঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জুনাব আলী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাদাঘাট কলেজে বিএসএস ২০০ ও বিএ ৬০টি আসন প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৯-২০২০ইং শিক্ষাবর্ষে কলেজে সাড়ে ৩শ’র মতো শিক্ষার্থীর আবেদন করে। অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপে ডিগ্রি পাস কোর্সের আসন বৃদ্ধির জন্য জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে দুই বার আবেদন করি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মৌখিক প্রতিশ্রুতির কারণে আমরা আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করি। স্থানীয় এমপির ডিও লেটার থাকার পরও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসন বৃদ্ধি না করায় ৮৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু এই শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা যায়নি। ২০২০-২০২১ইং শিক্ষাবর্ষে ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। ২০১৯-২০২০ইং শিক্ষাবর্ষে থেকে ২০২০-২০২১ইং শিক্ষাবর্ষের সময়ের ব্যবধান ৬০ মাস হবে। বাস্তবতা বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্যধারণের অনুরোধ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির বলেন, আমাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বিষয়টি দেখবো। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেনি এটি সাংঘাতিক ব্যাপার। এটি কোনোভাবেই ভালো হয়নি। এখানে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com