কর্ণ বাবু দাস ::
সুনামগঞ্জে উৎসব মুখর পরিবেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের পদচারণায় প্রাণ ফিরেছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
রোববার ১৮ মাস পর চক কিংবা কালো কলমের ছোঁয়া পেয়েছে শ্রেণিকক্ষের ব্ল্যাকবোর্ড কিংবা হোয়াইট বোর্ডগুলো। করোনাকালে দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। এদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূল ফটকের সামনে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো, শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করানো, সকলের হাত ধোয়া নিশ্চিত করাসহ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেণিকক্ষে বসার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
রোববার দীর্ঘবিরতির পর বিদ্যালয়ে এসে আনন্দে মেতেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সাথে আনন্দিত শিক্ষকরাও। শিক্ষার্থীদের বরণ করতে নেয়া হয় নানা উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে ক্লাসে ফুল দিয়ে বরণ করছেন শিক্ষকরা।
শহরের এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে হচ্ছে ছাত্রদের।একজন শিক্ষক থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা চেক করছেন ছাত্রদের। পুরো বিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শিক্ষকরা ক্লাসে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশের সাথেসাথে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করছি। গেইটে মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখা আছে। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করছি। ক্লাস শুরুর আগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের বসানো হয়েছে। সশরীরে ক্লাস করতে পেরে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা খুশি ।
দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, স্কুলে আসার জন্য অনেকদিন যাবত অপেক্ষায় ছিলাম। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ না কমায় স্কুল এতোদিন বন্ধ ছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় স্কুল খোলা হয়েছে। স্কুলে আসতে পেরে ও ক্লাস করতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে।
এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইনসান মিঞা বলেন, আমরা আজকে সুশৃঙ্খল পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রদের ক্লাসে প্রবেশ করিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ছাত্রদের বলা হচ্ছে। স্কুল খোলায় আমরা সবাই অনেক খুশি।
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রদের আগমনকে স্বাগত জানাতে ফুল ও বেলুন দিয়ে ক্যাম্পাস সুসজ্জিত করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগে মুগ্ধ হন ছাত্র এবং অভিভাবকরা।
সুনামগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়েও ছাত্রীদের বরণে নেয়া হয় নানা উদ্যোগ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান চলছে। বিগত কয়েকদিন ধরে আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। শিক্ষক ও স্টাফরা সবাই মিলে স্কুল সাজিয়েছি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জে ২৩৩ টি মাধ্যমিক স্কুল ও ৯৯ টি মাদ্রাসায় আনন্দঘন পরিবেশে ক্লাস নেয়া হয়েছে। দেড় বছর পর শ্রেণিকক্ষে ফিরে শিক্ষার্থীরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি আনন্দিত শিক্ষকরাও।