সাজ্জাদ হোসেন শাহ্ ::
তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্পট টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক। যেখানে প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে। জেলা সদর সুনামগঞ্জ থেকে টেকেরঘাটে আসার একমাত্র সড়ক হলো টেকেরঘাট-মহেষখলা সড়ক। বর্তমানে সড়কটি ভোগান্তির আরেক নামে পরিণত হয়েছে। পর্যটক ছাড়াও এই সড়ক দিয়ে উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর শ্রীপুর ও পার্শ্ববর্তী বড়দল উত্তর ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার লোকের জেলা সদরে আসা যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বারেকেরটিলার উপরের পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তার পুরোটাই খানাখন্দ আর গর্তে ভরপুর হয়ে গেছে। সড়কের বারেকেরটিলার অংশটি নির্মাণের পর গত ২০ বছরে একাধিকবার ভেঙে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের অনুপযোগী হলেও এটি মেরামতে নেয়া হয়নি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। যার ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ এখানে আসা পর্যটকরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে এবং প্রতিদিন ঘটছে কোন না কোন দুর্ঘটনা। এছাড়াও সড়কের চাঁনপুর রজনীলাইন এলাকায় পাহাড়ি ঢলে প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক ভেঙে খাল হয়ে গেছে।
গেল বছর তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হাজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার নিজ অর্থায়নে খালটি ভরাট করে দিলেও এবছর বর্ষার শুরুতেই আবারো রাস্তা খালে পরিণত হয়। তাছাড়া উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের শহীদ সিরাজ লেকের সামনে এবং টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের (বর্তমানে বন্ধ) ওয়েটব্রিজের সামনে ও লাকমা বাজারের সামনে সড়ক পাকা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা ও গর্তে ভরপুর হয়ে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। ফলে আগত পর্যটক ও এলাকাবাসীকে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক আব্দুল্লাহ আল মোজাম্মেল জিলানী বলেন, নৌকা দিয়ে টেকেরঘাট নেমে অটোরিকসা নিয়ে পরিবারের সদস্যসহ গিয়েছিলাম লাকমাছড়ায়। কিন্তু এ সড়কটি খানাখন্দ আর গর্তের কারণে পথিমধ্যে অটোরিকাস উল্টে গিয়ে আমরা পড়ে যাই। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের এমন বেহাল অবস্থা মেনে নেয় যায় না। আশা করি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে আগত পর্যটকসহ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করে দিবেন।
কয়লা আমদানিকারক উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ব্যবসায়িক কাজে প্রতিদিন শুল্ক স্টেশন বড়ছড়ায় আসা-যাওয়া করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে এলাকাবাসীসহ আগত পর্যটকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন।
সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক বলেন, উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। এসড়কের পাশে রয়েছে তিনটি শুল্ক স্টেশন। যেখান থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় দুই শত কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। অথচ এ সড়কটির রজনীলাইন, টেকেরঘাট, লাকমা ও বীরেন্দ্রনগরের রঙ্গাছড়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ বর্ষা মৌসুম এলেই সড়ক ভেঙে খানাখন্দ আর গর্ত হয়ে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ২ ইউনিয়নবাসীসহ আগত পর্যটকদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। আশা করি সংশ্লিষ্টরা সড়কটি মেরামতের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে সড়কটি যানবাহন ও পথচারী চলাচলের উপযোগী করে দিবেন।
এলজিইডি তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইকবাল কবীর সুনামকণ্ঠকে বলেন, টেকেরঘাট-মহেষখলা ২৮ কিলোমিটার সড়কটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত বিশেষ প্রকল্পের সড়ক। এটি এখন একনেকে অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তাছাড়া ছোট খাটো যে সড়কগুলো কিছু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলো সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।