আশিস রহমান ::
ভবনের ছাদ ও দেয়ালে বাইরে শেওলা পড়েছে। অযত্নে বিভিন্ন জায়গায় জন্মেছে আগাছা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন এটি একটি পরিত্যক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক ভবন। বাস্তবে আসলে তা নয়। এটি সোনালী ব্যাংকের দোয়ারাবাজার উপজেলা শাখার কার্যালয়। প্রতিদিনই এখানে শত শত গ্রাহকের ভিড় জমে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাএর দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বেশির ভাগ গ্রাহকদের।
স্থানীয় গ্রাহকরা জানান, পূর্বে একাধিক বার ছাদের অংশ ধসে কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এনিয়ে স্থানীয় সংবাদপত্র লেখালেখি হয়েছে। অনেকে অভিযোগও করেছেন। কিন্তু এরপরেও এরকম একটি জরাজীর্ণ ভবনেই দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয় ভবনের ভেতরের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে এখন রড বের হয়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুইয়ে পড়ে ভবনের ভেতরে। আয়তনের দিক দিয়ে রুমের পরিসর বড় না হওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।
সোনালী ব্যাংকের দোয়ারাবাজার শাখা সূত্রে জানা যায়, দোয়ারাবাজারে সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৩ সাল থেকে। বর্তমানে উপজেলাজুড়ে ব্যাংকটির গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার।
গ্রাহক মাহমুদুর রহমান রাসেল বলেন, এখানে সেবা নিতে এসে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আসলেই ভয় লাগে। ব্যাংকের কার্যালয়টি এখান থেকে সরিয়ে নিরাপদ ভবনে দ্রুত স্থানান্তরের দাবি জানাই।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজসহ বিভিন্ন সরকারি ও ব্যক্তিগত কাজে বাধ্য হয়েই সোনালী ব্যাংকে যেতে হয়। কিন্তু ব্যাংকের কার্যালয়ের যা অবস্থা এখানে দাঁড়াতেও ভয় করে কখন জানি ছাদ ধসে পড়ে। গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাংক অথচ তাদের একটা ভালো কার্যালয় নেই।
টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার যে প্রায় তিন যুগ ধরে একটা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এভাবে ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে। যদি কোনো সময় অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটে তখন এর দায়ভার কারা নেবে? এখানে যারা ব্যাংকে কাজ করছেন তারা নিজেরাই ঝুঁকির মধ্যে আছেন। আর আমরা যারা এখানে ব্যাংকিং সেবা নিতে যাই আমরাও ঝুঁকির মধ্যে আছি। এই অবস্থার দ্রুত পরিত্রাণ চাই।
সোনালী ব্যাংকের দোয়ারাবাজার শাখার ম্যানেজার বিধুভূষণ দাস বলেন, ব্যাংক ভবন নিয়ে প্রায়ই কথা শুনতে হয়। এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। ইতোমধ্যে দোয়ারাবাজার থানার পাশে বাবু স্বপন সূত্রধরের বিল্ডিংয়ে সোনালী ব্যাংকের দোয়ারাবাজার শাখার কার্যালয় স্থানান্তরের জন্য একটি চুক্তি স¤পাদন করেছি। আশাবাদী আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে নতুন ভবনে সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে।