বিশেষ প্রতিনিধি ::
প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলের মানুষের একমাত্র চিকিৎসা জন্য উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দরজায় গত কয়েক মাস ধরেই ঝুলছে তালা। তালা খোলার জন্য দায়িত্বশীল লোক নেই। ফলে করোনা মহামারির এই সময়ে প্রতিদিন হাওরপাড়ের ১৫টি গ্রামের মানুষজন চিকিৎসার জন্য আসলেও চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে করে মানুষজন গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।
তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের শ্রীপুরবাজার সংলগ্ন হাওরপাড়ে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবস্থান। বছরের পর বছর ধরে দায়সারাভাবে চলছে এ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটির কার্যক্রম।
স্থানীয়রা জানান, হাওরকেন্দ্রিক প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রটির দরজায় ঝুলছে তালা। এতে করে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এই ইউনিয়নের ছিলানী তাহিরপুর, জয়পুর, ইসলামপুর, জয়পুর নতুনহাটি, গোলাবাড়ি, শ্রীয়ারগাঁও, মুজরাই, মন্দিয়াতা, মইয়াজুরী, কামালপুর, মন্দিয়াতা কান্দাহাটি, তরংশ্রীপুর, শিবরামপুর, কালা শ্রীপুর, নয়াবন্দ, কামালপুর গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক অসহায়, হতদরিদ্র ও দিনমজুর পরিবারের মানুষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকেন্দ্র সূত্রে জানাযায়, এ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১জন এমবিবিএস, ১ জন কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ১ জন ফার্মাসিস্ট, ১জন এমএলএসএসসহ মোট ৪টি পদে জনবল থাকার কথা থাকলেও তা শূন্য রয়েছে। একজন এমবিবিএস ও একজন মেডিকেল অফিসার কাগজে কলমে দায়িত্বে থাকলেও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি কোনোদিন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পাশের বাসিন্দা শাকিল মিয়া জানান, এ অঞ্চলের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। বর্তমান করোনা প্রাদুর্ভাবে এমনিতেই মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে তালা ঝুলছে। তা মানা জানায় না। প্রত্যন্ত হাওরপাড়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর সাথে উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এখন চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
আল-আমিন মিয়া, হোসেন মিয়া সহঅনেকেই ক্ষোভের সাথে জানান, এই করোনা দুর্যোগের মধ্যে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নিয়োগ না দেওয়ায় হাওরপাড়ের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার ভরসাস্থলটিতে তালা ঝুলছে। যা খুবই দুঃখজনক। তাই দ্রুত জনস্বার্থে জনবল নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করার দাবি জানাই।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু আহমেদ শাফী জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। আমি এসেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তবে জনবল সংকট থাকায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র সঠিক সেবা দিতে পারছে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শামস উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।