স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়ের অন্তর্গত রামনগর গ্রাম সংলগ্ন সুরমা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করছে একটি অসাধু চক্র। নদী থেকে মাটি উত্তোলনে এলাকাবাসী বাধা দিলেও তারা তাতে কর্ণপাত করছে না। বরং প্রতিবাদকারীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে অসাধু চক্রের সদস্যরা। অপরদিকে, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলনের ফলে এলাকায় নদীভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। রামনগর গ্রামের সচেতন লোকজন ইতোমধ্যে বিষয়টি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সুরমা নদীর অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে রামনগর গ্রামের নদী তীরবর্তী অনেক ঘর-বাড়ি, বসতভিটাসহ, ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় জনগণ ভাঙনরোধে সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছেন। জনদাবির প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রচেষ্টায় সম্প্রতি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এলাকাটি পরিদর্শন করে গেছেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী নদী ভাঙনরোধে প্রকল্প গ্রহণের আশ্বাস দেন। এদিকে, ভাঙন কবলিত স্থান থেকেই অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করছে অসাধু চক্র। চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে নানা অপকৌশলের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের আর্থিক ফায়দা দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প ও বসতভিটার জন্য উত্তোলিত মাটি বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা আরও জানান, গ্রামবাসী ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনে বাধা-নিষেধ দিলেও তাতে তারা কর্ণপাত করছে না। নির্বিঘ্নে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। স্থানীয় জনগণ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে গত মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) জামালগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে পরিদর্শন করে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনে নিষেধ করেন এবং ড্রেজার সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে চক্রটি মাটি উত্তোলন সাময়িক বন্ধ রাখলেও নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ড্রেজার সরিয়ে নিতে টালবাহানা করছে।
রামনগর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে সুরমা নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আমাদের গ্রামে হুমকির মুখে পড়েছে। নদীভাঙন কবলিত এলাকা থেকে মাটি উত্তোলনের ফলে বাজার, বসতবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করি।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসিল্যান্ড এবং সার্ভেয়ার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল জামালগঞ্জ উপজেলার অংশে নয়, এটি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আওতাধীন।