1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জের নাসুম নৈপুণ্যে অজি বধ

  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে নামা। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, জিম্বাবুয়ে ও অস্ট্রেলিয়া একই মানের দল নয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও বিষয়টি জানতেন। তবে মাহমুদউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, নিজেদের
সেরাটা দিতে পারলে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সম্ভব। ব্যাটিংয়ে সেই ‘সেরা’টা দিতে না পারলেও বোলারদের অসাধারণ পারফরম্যান্সে জয় দিয়েই পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্পিনাররা, বিশেষ করে সুনামগঞ্জের সন্তান নাসুম আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি সফরকারীরা। ৭ উইকেটে করা ১৩১ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ২০ ওভারে অলআউট হয় ১০৮ রানে। আর এরই সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের শক্তির জানান দিলো বাংলাদেশ। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে অনেক- এই অপবাদ ও ব্যর্থতা থেকে বেরোনোর প্রথম ধাপটাও হয়তো সেরে ফেললো শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে। তাও আবার মাত্র ১৩১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে। বলার অপেক্ষা রাখে না, জয়ের পুরো কৃতিত্বই পাবেন বোলাররা। যেখানে নাসুম ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আগের চারবারের সাক্ষাতে কোনও জয় ছিল না বাংলাদেশের। পঞ্চমবারে সফল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারলেও বোলাররা স্বল্প পুঁজিতে এনে দিয়েছেন জয়ের আনন্দ। সফরকারীদের অলআউট করার পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা নাসুম আহমেদ। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম ৩ ওভারে পেয়েছেন ২ উইকেট। মেহেদী ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে পান ১ উইকেট। সাকিব আল হাসানও ১ উইকেট পেয়েছেন ২৪ রান খরচায়।
মিরপুরে নাসুম-শো :
বাংলাদেশের উইকেট উৎসবের শুরুটা করেছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে অস্ট্রেলিয়ার ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন আসলে সুনামগঞ্জের নাসুম আহমেদ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলেছে নাসুম-শো। এই বাঁহাতি স্পিনার একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে এনে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া-বধের আনন্দ।
৪ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করেছেন এই স্পিনার। তার বোলিং ফিগারটা এমন- ৪-০-১৯-৪। অর্থাৎ, ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। শুরুটা করেছিলেন ওপেনার জশ ফিলিপেকে দিয়ে। এরপর তুলে নেন ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাশটন অ্যাগারের উইকেট। আর সবশেষে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট মিচেল মার্শকে তুলে নেন। মার্শ টিকে থাকায় অস্ট্রেলিয়া আশার আলো দেখতে পাচ্ছিল। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে এই ব্যাটসম্যানকেও নাসুম ফেরান শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। ফেরার আগে মার্শ ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় করেন ৪৫ রান। নাসুম সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামের সন্তান। নাসুম সুনামগঞ্জের প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ খেলেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ :
এমনিতেই বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে নাস্তানাবুদ, এর ওপর আবার হিট উইকেটের শিকার! এ যেন অস্ট্রেলিয়ার ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা। অ্যাশটন অ্যাগার পা দিয়ে আঘাত করে স্টা¤প ভাঙলে পঞ্চম উইকেট হারায় সফরকারীরা।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক ¯িপনারদের সামনে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অ্যাগারকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মিচেল মার্শ। সঙ্গ দেওয়া অ্যাগার উইকেট বিলিয়ে এসেছেন হিট উইকেট হয়ে।
নাসুম আহমেদের বল এতটা পিছিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন অ্যাগার যে, তার জুতার পেছনের অংশ আঘাত করে স্টাম্পে। বেল পড়ে যাওয়ায় হতাশায় পোড়ে অস্ট্রেলিয়া, আর উইকেট আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।
ব্যর্থ ওয়েড :
অ্যারন ফিঞ্চের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব পেয়েছেন ম্যাথু ওয়েড। জাতীয় দলের জার্সিতে অধিনায়কত্বের অভিষেকটা মোটেও সুখকর হলো না তার। ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি। প্রয়োজনের সময় ২৩ বলে ১৩ রান করে নাসুমের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। যেখানে চাপের মধ্যে থাকা দলকে তোলার দায়িত্ব ছিল তার। তা তো করতে পারেনইনি, উল্টো দলকে ফেলে আসেন আরও বিপদে।
বাংলাদেশের স্পিনে এলোমেলো অস্ট্রেলিয়া :
দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং শুরু হচ্ছে, টেলিভিশনের সামনে থাকা দর্শকেরা নড়েচড়ে বসারও সুযোগ পেলেন না। উইকেট আনন্দে মাতলেন শেখ মেহেদী হাসান। সেই শুরু, একে একে আসতে থাকলো উৎসবের উপলক্ষ। নাসুম আহমেদ হয়ে সাকিব আল হাসান। ফল, বাংলাদেশের  স্পিন আক্রমণে এলোমেলো অস্ট্রেলিয়া।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম বলে উইকেট হারানোর পর ধাক্কা আরও জোরে লাগে দ্রুত ২ উইকেট হারালে। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে যে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে, সে কথা অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা বলে গিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তাই বলে এতটা হবে, সেটা হয়তো চিন্তা করেননি।

সাকিব বল তুলে নিয়েই করেছেন উইকেট উদযাপন। মোয়েসেস হেনরিকসকে বোল্ড করে তৃতীয় উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। অফ স্টা¤েপর বল লেগ সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে বোল্ডের শিকার এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ২ বলে করেন মাত্র ১ রান।
প্রথম বলেই উইকেট :
প্রথম বলেই উইকেট বাংলাদেশের। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত শুরু এনে দিলেন শেখ মেহেদী হাসান। এই স্পিনারের প্রথম বলে আউট হয়ে গেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে আরেকটি উইকেট।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করেছে বাংলাদেশ। বড় স্কোর গড়তে না পারায় বোলিংয়ে দারুণ শুরু প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। সেই শুরুটা এনে দিলেন মেহেদী। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ শুরুতে তার হাতেই তুলে দিয়েছিলেন বল। বল পেয়েই বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন ক্যারিকে।
তাতে কোনও রান তোলার আগেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। শুরুর ধাক্কা সামলাবে কী, দ্বিতীয় ওভারে আবার উইকেট হারিয়েছে তারা। নাসুম আহমেদের বলে ফিরে গেছেন জশ ফিলিপে। স্টাম্পিং হয়ে ফেরার আগে ৫ বলে ১ ছক্কায় করেন ৯ রান।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের বোলারদের সামলানোর চ্যালেঞ্জ অবশ্যই ছিল। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সে কথা সংবাদ সম্মেলনে বলেও গিয়েছিলেন। তবে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের খুব বেশি চেষ্টা করতে হয়নি, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে তাদের কাজ সহজ করে দিয়েছেন। উইকেট ছেড়ে আসার খেলায় নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ করেছে ৭ উইকেটে ১৩১ রান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাজেভাবে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাটসম্যান। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার (৯ বলে ২) ও নাঈম শেখের (২৯ বলে ৩০) আউট ছিল দৃষ্টিকটু। নুরুল হাসান সোহানও (৪ বলে ৩) উঠবেন কাঠগড়ায়। ধৈর্যশীল ইনিংস খেলা সাকিব আল হাসানের (৩৩ বলে ৩৬) আউটেও কৃতিত্ব পাবেন না বোলার জশ হ্যাজেলউড। কেবল আফিফ হোসেন (১৬ বলে ২৩) ও শামীম হোসেনের (৩ বলে ৪) আউট দুটিতে ছিল মিচেল স্টার্কের প্রশংসা করার মতো বোলিং।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সফল বোলার হ্যাজেলউড। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে তার শিকার ৩ উইকেট। স্টার্ক ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা ও অ্যান্ড্রু টাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩১/৭ (সাকিব ৩৬, নাঈম ৩০, আফিফ ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২০; হ্যাজেলউড ৩/২৪, স্টার্ক ২/৩৩)। অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১০৮ (মার্শ ৪৫, স্টার্ক ১৪, ওয়েড ১৩; নাসুম ৪/১৯, মোস্তাফিজ ২/১৬, শরিফুল ২/১৯)। ফল: বাংলাদেশ ২৩ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: নাসুম আহমেদ।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com