1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০২:১৮ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

গাছ কাটায় বাস্তুহারা হাজারো পাখি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

শামস শামীম ::
শাল্লা উপজেলার মামুদনগরের বৈরাগীবাড়ির নয়ন গোসাই আখড়ায় গাছপালা কাটায় বাস্তুহারা হয়েছে হাজারো পাখি। উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের দুর্গম গ্রাম মামুদনগরের এ আখড়া বক, পানকৌড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে ঘন গাছপালা ও প্রাকৃতিক নীরবতার কারণে পাখিরা নিরাপদ মনে করে আবাস গেড়েছিল।
সোমবার সকাল থেকে আখড়ার গাছের ডালপালা কাটা শুরু হলে বিপন্ন হয়ে পড়ে অনেক পাখির বাসা। ছানাসহ বাসা নিয়ে অনেক পাখি মাটিতে পড়ে যায়। আর এসব পাখি কুড়াতে সেখানে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। কুড়ানো পাখি অনেকে খাঁচায় ধরে রেখেছেন। অনেকে কুড়িয়ে জবাই করে রসনা তৃপ্তি করেও খেয়েছেন।
প্রকৃতির সুন্দর পাখিদের এভাবে বাস্তুচ্যুত করার খবরটি পাখিপ্রেমিদের কাছ থেকে পেয়ে পাখি রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
জানা গেছে, বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার ইন্ডেজেনার্ড ওয়াইল্ডলাইফ-এর সমন্বয়ক সোহেল শ্যামকে প্রথমে গ্রামের এক ব্যক্তি পাখি ধরা ও বৃক্ষ কাটার ভিডিও পাঠান। তিনি বিষয়টি জেনে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ও বন বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। এরপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্গম গ্রামে আখড়ার সেবায়েতকে খবর পাঠিয়ে পাখিদের বাস্তুহারা করার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈরাগী বাড়ির নয়নগোসাই আখড়ার সেবায়েত গৌরাঙ্গ গোসাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছেন। প্রতি দুই বছর পর পর তার একক সিদ্ধান্তে আখড়ার ডালপালা বিক্রি করে দেয়া হয়। এবারও তিনি প্রায় তিন লক্ষ টাকায় গাছের ডালপালা বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় জলাশয়ের এক মালিকের কাছে। সোমবার সকাল থেকে ইজারাদারের লোকজন জলাশয়ে গাছের ডালপালা ফেলার জন্য গাছ ন্যাড়া করতে শুরু করে। এসময় বক, পানকৌড়িসহ নানা প্রজাতির পাখি কিচির-মিচির শুরু করে। হঠাৎ একসঙ্গে হাজার হাজার পাখির আর্তনাদ শুনে জড়ো হন এলাকাবাসী। পাখির অভয়াশ্রম ধ্বংস করায় পাখির ছানা, বাসাসহ পাখিগুলো নিচে পড়তে থাকে। আর কুড়াতে থাকেন গ্রামের বিভিন্ন বয়সের মানুষজন। তারা নির্বিচারে পাখি ধরেন। অনেককে একাধিক পাখি ধরে পিঞ্জিরায় বন্দি করে রাখতেও দেখা গেছে।
আখড়ার সেবায়েত গৌরাঙ্গ গোসাই বলেন, “আমরা দুই বছর পরপর আখড়ার ডালপালা বিক্রি করে দেই, এবারও বিক্রি করেছি। সোমবার লোকজন এসে ডালপালা কাটার সময় কিছু পাখি নিচে পড়ে গেলে স্থানীয়রা কুড়িয়ে নেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিকেলে আমাকে গাছপালা না কাটার জন্য লোক পাঠিয়ে বলেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আজাদ জানান, নয়ন গোসাইয়ের আখড়া এ অঞ্চলের সমৃদ্ধ ও পুরনো আখড়া। সেখানে অনেক গাছগাছালি থাকায় প্রাকৃতিকভাবে পাখির অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। বিকাল ৪টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই লোক পাঠিয়ে আখড়ার ডালপালা কাটা বন্ধ করান বলে জানান তিনি।
বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার ইন্ডেজেনার্ড ওয়াইল্ডলাইফ-এর সংগঠক সোহেল শ্যাম জানান, এলাকার একজন তাকে পাখির অভয়াশ্রম ধ্বংসের ভিডিও পাঠালে বনবিভাগ, প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের অবগত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে বৃক্ষ ও পাখি হত্যার উৎসব চলছে।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ অফিসার মির্জা তমাল সারোয়ার বলেন, এ খবর পেয়ে আমরা সিলেট ও সুনামগঞ্জ বন বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com