আশিস রহমান ::
দূর থেকে ময়লা আবর্জনার স্তূপ দেখে মনে হবে যেন একটি খোলা ডাস্টবিন। দীর্ঘদিন ধরে যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা। এসব পচে-গলে চারপাশে ছড়াচ্ছে কটু দুর্গন্ধ। শুধু ময়লা আবর্জনাই নয়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা রাখা হয়েছে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিভিন্ন পরিত্যক্ত বোতল, বিপজ্জনক ভাঙা কাঁচসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য। নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এসব বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা সরাসরি কালিউড়ি ও সুরমা নদীতে গিয়ে মিশছে। আবার এসব নদীর পানি ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত গোসলসহ, রান্নাবান্না ও গৃহস্থালির কাজ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাতাস ও পানির মাধ্যমে বর্জ্য থেকে ছড়াচ্ছে রোগ জীবাণু। পরিবেশ দূষণের দৃষ্টিকটু এই দৃশ্যটি পরিলক্ষিত হয় দোয়ারাবাজার উপজেলার দোয়ারাবাজার-শরীফপুর কালিউড়ি নদীর তীরে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা ভূমি অফিসের উত্তর-পশ্চিম পাশে কালিউড়ি সেতুর অবস্থান। সেতুর উত্তর পাশে শরীফপুর গ্রাম ও দক্ষিণ পাশে উপজেলা ফরেস্ট অফিস, মাছ বাজার, সিএনজি স্টেশন ছাড়াও একাধিক ব্যবসায়িক স্থাপনা অবস্থিত। উপজেলার জনবহুল সেতুগুলোর মধ্যে এটি একটি। সেতুটি সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বোগলা ও বাংলাবাজার ইউনিয়নকে উপজেলা সদরের সাথে যুক্ত করেছে। এই চার ইউনিয়নের মানুষ ছাড়াও এদিক দিয়ে প্রশাসনের লোকজন নিয়মিত আসা-যাওয়া করে থাকেন। কিন্তু কোনো ধরনের প্রশাসনিক বাধা নিষেধ না থাকায় জনবহুল এই সেতুর গোড়ায় কালিউড়ি নদীর তীরে প্রতিদিনই যে যার মতো করে বাজারের যাবতীয় বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন। এসব থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে এদিক দিয়ে পারাপারের সময় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় পথচারীদের। উৎকট দুর্গন্ধে পথচারীরা হাতে নাক চেপে সেতু পারাপার হন। কালিউড়ি নদীর তীর থেকে বর্জ্য অন্যত্র অপসারণ এবং এখানে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হোক এমনটাই দাবি এলাকার সচেতন মানুষদের।
সেতুর পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ী এখলাছুর রহমান বলেন, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে দোকানে বসা যায়না। মশা-মাছির উৎপাত বাড়ছে। সেতুর গোড়া থেকে বর্জ্য অপসারণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পথচারী শিউলী বেগম বলেন, দুর্গন্ধে বমি আসে। এদিক দিয়ে চলাচল করার মতো না।
সিএনজি চালক স্বপন মিয়া বলেন, এখান থেকে ময়ল-আবর্জনা-বর্জ্য অপসারণ করা জরুরি। দুর্গন্ধে চলাফেরা করা যায়না।
উপজেলা সিএনজি মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, এখানে একটা সিএনজি স্টেশন আছে। আমরা চালক-যাত্রীরা এই পরিবেশে খুবই অস্বস্তির মধ্যে আছি। ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে এখানে এক মুহূর্তের জন্যও দাঁড়ানো যায় না। এসব দেখার কেউ নাই!
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, পরিবেশ দূষণের বিষয়টি দেখব। এখানে যাতে বাজারের বর্জ্য না ফেলা হয় সেজন্য আশপাশের ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হবে।