কর্ণ বাবু দাস ::
আর কিছুদিন পর কোরবানির ঈদ। করোনা সংক্রমণ কমানোর লক্ষ্যে সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। সারাদেশের ন্যায় সুনামগঞ্জেও চলছে কঠোর লকডাউন। এ কারণে বন্ধ রয়েছে গরুর হাট। গরু কেনাবেচার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে অনলাইন প্লাটর্ফম। তবে অনলাইনে সাড়া মিলছে ক্রেতা-বিক্রেতার। তবে সোমবার লকডাউনের শিথিলের খবরে খামারিরা আশার আলো দেখছেন।
জেলার খামারি ও কৃষকরা বাড়িতে ও ফার্মে গরু লালন পালন করে বছর শেষে কোরবানি ঈদে বিক্রি করে থাকেন। করোনা সংক্রমণের কারণে এবার জেলার হাটগুলো বন্ধ রয়েছে। খামারিরা জানান, হাট না থাকায় বাড়িতে গরু বিক্রি করে আশাতীত দাম পাচ্ছেন না তারা। অনলাইনেও তেমন সাড়া মিলছে না। তাই কম দামে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সুহেল অ্যাগ্রোফার্মের মালিক রুবেল মিয়া বলেন, করোনার জন্য গতবছরও গরু বিক্রি করতে পারি নাই। গরুগুলো সারা বছর লালন-পালন করেছি। সারাবছর গরু লালন-পালন করায় গরুর খাবার ও শ্রমিকের মজুরি দিতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ভাবছিলাম এ বছর গরু বিক্রি করে করে ক্ষতি পুষিয়ে নেবো। কিন্তু লকডাউনের কারণে হাট না থাকায় আবারও বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছি। হাট না থাকায় বাড়ি থেকে গরু বিক্রি করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি অনলাইনেও গরু বিক্রির চেষ্টা করছি। তবে আশাতীত দাম পাচ্ছি না। বেপারিরা বাড়িতে এসে কম দামে কিনছেন। হাট হলে বাজার যাচাই বাছাই করার সুযোগ থাকতো। সে সুযোগ এবার পাচ্ছি না।
দক্ষিন সুনামগঞ্জের নাবিল অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক শিপন মিয়া বলেন, করোনাকালে বেকার না থেকে পরিবার থেকে টাকা এনে কিছু করার চেষ্টা করেছিলাম। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ৩০টা গরু কিনেছিলাম। বিগত তিনমাস যাবত গরুগুলো লালনপালন করেছি। এখন বিক্রি করার সময়। কিন্তু লকডাউনের কারণে গরু হাটে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। খামারে এবং অনলাইনে গরু বিক্রির চেষ্টা করেও সফল হতে পারছি না। গরুগুলো এই ঈদে বিক্রি করতে না পারলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন , সুনমগঞ্জে এবছর ৪৮ হাজার ৮০৩টি গরু দেশীয় পদ্ধতিতে লালনপালন করে প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে পশুগুলো বাজারে বিক্রি করা যাচ্ছে না। সেজন্য প্রতি উপজেলায় এবং গরু ক্রয় বিক্রয় করার অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। তবে অনলাইনে সব গরু বিক্রি করা যাবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।