নানা কারণে কিশোরদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, শিথিল পারিবারিক বন্ধন, মা-বাবার সন্তানকে সময় না দেয়া, সামাজিক অবক্ষয়, স্বল্প বয়সে স্মার্টফোনসহ উন্নত প্রযুক্তি উপকরণের নাগাল পাওয়া, সঙ্গদোষ ইত্যাদি এর জন্য দায়ী।
প্রতিদিনই গণমাধ্যমে কিশোর অপরাধের খবর আমরা পাচ্ছি। রাস্তাঘাটে ছিনতাই, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, বাধা দিলে রক্তারক্তি পর্যন্ত করছে কিশোর অপরাধীরা। প্রশাসনের নানা পদক্ষেপের পরও তাদের অপতৎপরতার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। তবে প্রশাসন এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জানাগেছে, র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাং সদস্যদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি চলছে অভিযানও। এর সঙ্গে পাড়া-মহল্লায় যেসব রাজনৈতিক নেতা বা প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের প্রয়োজনে কোমলমতি কিশোরদের আশকারা দিয়ে অপরাধ করাচ্ছে, তাদেরও তালিকা হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত তালিকা তৈরি হোক। যে কোনোভাবে তাদের দমন করতে হবে।
এই কিশোররা আগামীর ভবিষ্যৎ। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কিশোর সন্ত্রাস নতুন একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিশোররা যেন অপরাধে জড়াতে না পারে এবং কেউ তাদের অসৎ কাজে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। কিশোর অপরাধ নির্মূলে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পরিবারের। কারণ পরিবারই একটি শিশুর বেড়ে ওঠার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। পরিবার যদি তার সন্তানদের ব্যবহার ও আচরণ গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, সন্তানের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কী কী দরকার সে অনুযায়ী তাদের লালনপালন করে তাহলে সেগুলো একটি সুস্থ ও সুন্দর জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একটি পরিবারের প্রবীণদের উচিত অপ্রাপ্তবয়স্ক সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ স¤পর্ক গড়ে তোলা, নৈতিকতা শেখানো এবং তাদের ক্রিয়াকলাপের ওপর নজর রাখা। স্কুল কারিকুলামের বাইরে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট করা এবং যুক্ত করার সুযোগ বাড়াতে হবে। কিশোর অপরাধ রুখতে ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। যারা ইতোমধ্যে অপরাধ চক্রে জড়িয়ে গেছে, তাদের সুপথে নিয়ে আসতে উপযুক্ত কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।