1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাবাকে নিয়ে কিছু কথা : গীতশ্রী রায়

  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ জুন, ২০২১

বাবা দিবসে আমার বাবার আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি। পৃথিবীর সকল বাবাদের জানাচ্ছি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর অপরিসীম ভালোবাসা।
“বাবা” নামক শব্দটি অনেক মধুর কিন্তু আমার জীবনে সেই শব্দটির শূন্যতা জন্মের পর থেকেই। সবার মনেই প্রশ্ন জাগবে কেন? কারণ বাবার মৃত্যুর তিনমাস পরে আমার জন্ম। আমি জন্ম নিয়ে বাবাকে দেখিনি। সেই “বাবা” শব্দটির মধ্যে যে ভালোবাসা, যে গভীরতা তা আমাকে স্পর্শ করেনি। বিরাট শূন্যতা নিয়ে আমার বড় হওয়া। তবে আমার বড়ভাই দোলন (দুলু) সেই শূন্যতা পূরণের নিরবধি চেষ্টা করে যেতেন। তিনি ক’বছর আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। অন্য দুইভাই মেজদা (শ্যামল) ও ছোড়দা (শীতল) এখনও আমার জন্য অনেক কিছু করেন। আমার চাওয়া-পাওয়ার দিকে উনাদের খেয়াল সবসময়।


আমার গ্রামের বাড়ি জামালগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল হরিপুর গ্রামে, বাবা প্রয়াত নলীনি কান্ত রায়। তিনি ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান। আমাদের গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকা সানবাড়ি নামক স্থানে প্রতি বৃহস্পতিবারে হাট বসতো। সবার বাবা ওইদিন হাটে যেতেন বেচা-কেনার জন্য। আমার বয়সী যারা ছিল তারা বিকেলবেলা বাবা আসার অপেক্ষায় থাকত। মায়ের মুখে শোনা যে, সবার বাবা ফিরে আসত, আমার বাবা আসে না কেন আমি নাকি কেঁদে কেঁদে মাকে জিজ্ঞেস করতাম। সে এক করুণ দৃশ্য! মা আমাকে সান্ত্বনা দিতেন, বলতেন তোমার বাবা তো কলকাতা চাকরি করেন, কলকাতাতেই আছেন।


বড় হলাম, আমার মা রেণু রায়ের সংগ্রামী জীবনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে লাগলাম। আমার মা ছিলেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কুরবাননগর ইউনিয়নের অচিন্তপুর জমিদার বাড়ির কন্যা। আমি ধীরে ধীরে বাবার শূন্যতা আরও বেশি উপলব্ধি করতে লাগলাম। তবে আমার মা একাধারে “মা” ও অন্যদিকে “বাবা”র ভূমিকায় আমাকে বড় করলেন। “বাবা” ডাকার জন্য তবুও মনটা আকুল হয়ে যেত।  একসময় আমার দিদি রূপশ্রী সেন-এর বড় ছেলে বিশ্বজিৎ সেন পাপনকে বাবা ডাকতে শুরু করলাম, আনন্দ পেলাম। ও আমাকে ভীষণ ভালোবাসে। আমার “বাবা” ডাকে সাড়া দিত। এমনকি আমার বিয়েতে কন্যাদানও সে করেছিল। এখন সে-ও একজন বাবা। তার একটি ফুটফুটে মেয়ে আছে।


শ্বশুরবাড়িতে এসে শ্বশুরকে না পাওয়াতে শ্বশুরকে “বাবা” বলে ডাকার ইচ্ছেটা ও অপূর্ণই রয়ে গেল। ১৯৯৯ সালে আমার একটি ছেলে সন্তান হলো। ওর মাঝে যেন আমি আমার বাবার অস্তিত্ব পেলাম। ওকে বাবার ভালোবাসায় বড় করলাম। সে এখন বড় হয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। আমি ওকে “বাবা” বলেই বেশি ডাকি। সে আমার প্রতি এতো কেয়ারফুল যে আমি আমার বাবার শূন্যতা ভুলে যেতে বসেছি। বাবার (অর্জন রায়) স্নেহ, যত্ন আর ভালোবাসায় আমি এখন পরিপূর্ণ। আমার জীবনের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ওর অবদান নেই। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করি- যেন সে একজন বড় মনের মানুষ হয়, ওর দ্বারা যেন সমাজ ও দেশের মানুষ উপকৃত হয়। পৃথিবীর সব সন্তানেরা বাবার আদরে আর আশীর্বাদে বড় হোক – এই প্রত্যাশা।
[গীতশ্রী রায় : প্রধান শিক্ষক, কালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ]

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com