বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশ ও বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২১ পালন করা হয়েছে। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল “আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি”।
তামাক একটি প্রাণঘাতী মারাত্মক ক্ষতিকর পণ্য। তা জানা সত্বেও মানুষ তা সেবন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী যুবক-যুবতীদের মধ্যে পরিচালিত গ্লোবাল ইয়ুথ টোবাকো সার্ভে ২০১৩ অনুযায়ী ৬.৯% শিশু, ৯.২% ছেলে ও মেয়ে ২.৯% তামাক সেবন করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিড়ি সিগারেট এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকের ক্ষেত্রে পানের সাথে সাদাপাতি, জর্দা এবং মাড়িতে গুল ইত্যাদি ব্যবহারই বেশি।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির ২০১৮ সালে এক গবেষণায় জানা যায়, সরকার তামাক থেকে যে রাজস্ব পেয়ে থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তামাক জনিত রোগের ক্ষেত্রে ব্যয় করে থাকে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হয়। এতে বলা হয় ত্রিশ বা তদুর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৭০ শতাংশের প্রাপ্ত বয়সী লোক তামাক জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ তামাক সেবনজনিত হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসে ক্যান্সার, মুখগহ্বরে ক্যান্সার, শ্বাসযন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর মধ্যে ৪ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি শিশু তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ৬১ হাজারের অধিক শিশু বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার।
২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তবায়ন করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায়। আমাদের মনে রাখতে হবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। তার জন্য নিজেদেরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য সকলকে ধূমপানবিরোধী আন্দোলনে নামতে হবে। নিজেদেরকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতে হবে- আমি ধূমপান ও তামাক সেবন করবো না। আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি- ‘জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি’।