মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রাণীগঞ্জ বাজার থেকে দক্ষিণে কুশিয়ারা নদীতে বসানো রয়েছে একটি ড্রেজার মেশিন। এ মেশিন থেকে প্রায় কয়েক হাজার ফুট পাইপ লাইন টানা হয়েছে। পাইপের শেষ প্রান্ত এসে পড়েছে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মাণাধীন রাণীগঞ্জ সেতুর অপারের অ্যাপ্রোচ সড়কের পাশে থাকা খাদে। এ পাইপ লাইন দিয়ে আসা বালু খাদের কিছু অংশ ভরাট হয়েছে। এসব বালু কে বা কারা বিক্রি করছেন জানতে চাইলে ড্রেজার নৌকায় থাকা শ্রমিকদের মধ্যে জাবেদ মিয়া বলেন, তারা নিজেও জানেন না কার কাজ করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাজ শুধু বালু দেয়া। গত ৮/১০ দিন ধরে ছোট ছোট ড্রেজার নৌকায় আমাদের বালু দেয়। এসব বালু আমরা এখান থেকে ড্রেজিং করছি। এর বাইরে কিছুই জানি না। তবে স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে জানান, দিনে এ ড্রেজার মেশিন চালানো হয় না। রাতের আঁধারে চলে মেশিন। এতে আমরা ধারণা করছি নদীর বিভিন্ন স্থানের বালুচর থেকে একটি মহল এসব বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মাণাধীন রাণীগঞ্জ সেতুর অ্যাপ্রোচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসবিএস লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান জানান, এ সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক ও টোল প্লাজা ভবন নির্মাণের জন্য আমাদের ১৫শ লাখ ফুট বালু লাগবে। এ জন্য সালেহ আহমদ নামের এক ব্যক্তির সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তিনি সাড়ে ৭ টাকা ফুট দরে আমাদের বালু দিচ্ছেন।
অথচ এসব ছোট আস্তর বালু বাজারে কমপক্ষে ৩০ টাকা ফুট দরে বিক্রি হচ্ছে বলে বালু ব্যবসায়ীরা জানান। বালু ব্যবসায়ীদের মতে ‘বালু মাটি’কে বলা হয় ‘ভিট বালু’। সেই ভিট বালু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা ফুট। তাও আবার ক্রেতার নিজ খরচে নিতে হবে। সে হিসাবে অনেক কমদরে নিজ খরচে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে কিভাবে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এ বিষয়ে সালেহ আহমদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে কোন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না। আমরা মৌলভীবাজার থেকে কিনে এনে ভর্তুকি দিয়ে বালু বিক্রি করে সরকারের উন্নয়নকাজে সহযোগিতা করছি। এতে আমরা মাত্র ২ থেকে ৩ লাখ ফুট বালু দিচ্ছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, এ বিষয়ে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।