রাজন চন্দ ::
প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিকের জীবন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী যাদুকাটা নদীর বালু মহালের ইজারা বৈধ ঘোষণার পর এবার ইজারা গ্রহিতাদের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রশাসন। শনিবার (১২ জুন) দুপুরে সুনাগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জসিম উদ্দিন ও তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির সরেজমিনে গিয়ে যাদুকাটা নদীর বালু মহালের সীমানা নির্ধারণ করেন।
এদিকে দীর্ঘ এক বছর নদীতে কাজ বন্ধ থাকার পর আবারো নতুন করে বালি উত্তোলনের কাজ শুরু হবে এমন খবরে কর্মহীন লাখো শ্রমিকের মুখে আনন্দ হাসি ফুটেছে।
সীমানা নির্ধারণ শেষে বেলা ২টায় যাদুকাটা নদীর তীরে শ্রমিক সমাবেশ করেন ইজারা গ্রহিতারা। এ সময় উপস্থিত শ্রমিকদের সার্বিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দৈনিক সুনামকণ্ঠ’র স¤পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মো. জিয়াউল হক, বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ স¤পাদক মো. আজাদ হোসাইন, সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম আহমেদ, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।
জানাযায়, চলতি বছরের ২৩ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে কিছু প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স নিলম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আজাদ হোসেন এন্টারপ্রাইজ ভ্যাট ট্যাক্সসহ প্রায় ১০ কোটি টাকায় ইজারাপ্রাপ্ত হয়। ইজারাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ইজারামূল্য বাবদ ১০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে পরিশোধ করলেও অপর একটি পক্ষ হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের আবেদন শুনানী শেষে জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারাবন্দোবস্ত এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। ফলে ইজারা গ্রহিতাগণ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন এবং এলাকার লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার দাবি জানান।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে ৫ সদস্যের পূণার্ঙ্গ বেঞ্চ আবেদনের শুনানির দিন ধার্য্য করেন ৮ জুন মঙ্গলবার। ওইদিন উভয়পক্ষের বিজ্ঞ কৌঁসুলীদের উপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারা বন্দোবস্ত বৈধ বলে ঘোষণা দেন।
যাদুকাটা নদী ইজারাদারদের পক্ষে মো. সেলিম আহমদ জানান, সীমান্ত এলাকার মানুষের একমাত্র জীবন জীবিকার কর্মস্থল হলো যাদুকাটা নদী। সারা বছর কর্মহীন লাখো নারী পুরুষের আয় রোজগারের পথ বন্ধ ছিল। দেশের সর্বোচ্চ আদালত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা বিবেচনা করেই আমাদের পক্ষে রায় প্রদান করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যাদুকাটা নদীর ইজারা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে লাখো কর্মহীন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।