স্টাফ রিপোর্টার ::
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা বালু মহালের ইজারা বৈধ ঘোষণার পর ইজারামূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় ভ্যাট, ট্যাক্সসহ ইজারামূল্য পরিশোধ করেছেন ইজারা গ্রহিতারা। ফলে মহাল থেকে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু করতে পারবেন তারা।
এদিকে, ইজারামূল্য পরিশোধ করার খবরে তাহিরপুরে বইছে খুশির বন্যা। মঙ্গলবার শ্রমিক-ব্যবসায়ীরা এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন। লাখো শ্রমিক আবার কাজে ফেরার আনন্দে দিন গুনছেন।
ইজারাদারদের পক্ষে সেলিম আহমদ জানান, সীমান্ত এলাকার মানুষের একমাত্র জীবন-জীবিকার কর্মস্থল হলো যাদুকাটা নদী। লাখো বেকার যুবক-যুবতীর আয় রোজগারের পথ এতোদিন বন্ধ ছিল। দেশের সর্বোচ্চ আদালত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা বিবেচনা করে যাদুকাটা নদীর বালু মহালের ইজারা বৈধ ঘোষণার মাধ্যমে যুগান্তকারী রায় প্রদান করেছেন। আবারও মুখরিত হয়ে উঠছে যাদুকাটা নদীর লাখো শ্রমিকের পদচারণায়। আমরা ইতোমধ্যে বালু মহালের ইজারামূল্য পরিশোধ করেছি। দুই-একদিনের মধ্যেই মহাল থেকে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা বালু মহালের ইজারা বৈধ বলে ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের ফুল বেঞ্চ।
জানাযায়, চলতি বছরের ২৩ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন কিছু প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স নিলম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আজাদ হোসেন ভ্যাট ট্যাক্সসহ প্রায় ১০ কোটি টাকায় ইজারাপ্রাপ্ত হন। ইজারাপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে ইজারামূল্য বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন। কিন্তু একটি পক্ষ তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। রিটের আবেদন শুনানি শেষে জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারা বন্দোবস্ত এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে ইজারাদাররা স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে আবেদন করা হয় এবং এলাকার লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার দাবি জানানো হয়। যাদুকাটা নদী খুলের দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় কর্মহীন শ্রমিকরা আন্দোলনও করেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে ৫ সদস্যের পূর্ণবেঞ্চ আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য্য করেন ১ জুন। উভয়পক্ষের বিজ্ঞ কৌঁসুলিদের যুক্তিতর্কের শুনানী শেষে প্রধান বিচারপতি জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারা বন্দোবস্ত বৈধ বলে ঘোষণা দেন। ফলে আবারও প্রমাণিত হয় অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকার ও বিচারবিভাগ আন্তরিক।