:: এস ডি সুব্রত ::
কথায় আছে দুঃখ যখন আসে সব দিক থেকেই আসে। সোমবার সারাদিন ধরে এতটা মন খারাপ ছিল বুঝাতে পারব না। একটা অসম্ভব অস্বস্তি নিয়ে সময় কাটছিল। কোথাও প্রশান্তি পাচ্ছিলাম না। শেষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভারত-বাংলাদেশের ফুটবল খেলা দেখতে বসে যখন কিছুটা হালকা হবার চেষ্টা করছিলাম তখন পেলাম আরও বড় কষ্টটা। এ কষ্ট একটা মানুষ চলে যাওয়ার। যেখানে চলে গেলে আর ফিরে আসে না। সব বন্ধন খুলে দিয়ে যায় জনমের তরে। খেলার মধ্যবিরতির সময় ফেসবুকে ঢুকতেই দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার স¤পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায় বিজন দা’র একটা পোস্টে দৃষ্টি আটকে গেল। পোস্টটা পড়তে পড়তে শেষ মুহূর্তে বুকটা কেঁপে উঠলো। হঠাৎ করে মাথাটা ঝিম ধরে গেল। সারা শরীর যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে। কি দেখছি, কি শুনছি। মানিকদা (মানিক মোহন চন্দ) আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মেনে নিতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে। স্ত্রী ও তিন মেয়েকে রেখে বড় অসময়ে চলে গেলেন মানিকদা।
মানিকদার সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সুনামগঞ্জে গত কয়েক বছরে হাতেগুনা যে অল্প সংখ্যক মানুষের সাথে আমার পরিচয় তার মধ্যে মানিকদা অন্যতম। সুনামগঞ্জ শহরে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছি বোধহয় মানিক দা’র সাথেই। হলি চাইল্ড কিন্ডারগার্টেন, সুনামগঞ্জ-এর অধ্যক্ষ, সুনামগঞ্জ জেলা খেলাঘরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, ধানেশ্রী সংগীত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, সংস্কৃতিমনা নিরহংকার নিরভিমান প্রিয় মানিকদা এভাবে অসময়ে চলে যাবে ভাবতেই পারছি না। মানিক দার একটা ঔষধের দোকান ছিল আমার বাসার কাছেই। গতবছর দোকানটি আমার বাসা থেকে দূরে চলে যায়। সময় পেলেই মানিকদার দোকানে গিয়ে বসতাম। হাঁটতে বেরুলেই সময় পেলেই এক মিনিটের জন্য হলেও দাদার দোকানে যেতাম। যেদিন সময় কম থাকতো রাস্তা থেকেই হাঁটতে হাঁটতেই বলতাম দাদা কেমন আছেন? মানিকদা হাসিমুখে বলতেন ভালো আছি। সব সময় মুখে হাসি লেগে থাকত। আমার কয়েকটি গানে সুর দিয়েছিলেন। মিউজিক ভিডিও করার কথা ছিল। তার আগেই মানিকদা চলে গেলেন সকল মায়া ছেড়ে।
গান নিয়ে দাদার অনেক পরিকল্পনা ছিল। সবই বিধাতার খেলা। দাদা পরপারে ভাল থাকবেন – এই কামনা ছাড়া কিছুই রইল না।