স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা বালু মহালের ইজারা বৈধ বলে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের ফুল বেঞ্চ। মঙ্গলবার (১ জুন) সকালে রায় ঘোষণা করা হয়।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৩ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন কিছু প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স নিলম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আজাদ হোসেন ভ্যাট ট্যাক্সসহ প্রায় ১০ কোটি টাকায় ইজারা প্রাপ্ত হন। ইজারাপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে ইজারামূল্য বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন। কিন্তু একটি পক্ষ তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। রীটের আবেদন শুনানি শেষে জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারা বন্দোবস্ত এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে ইজারাদাররা স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে আবেদন করা হয় এবং এলাকার লাখো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার দাবি জানানো হয়। যাদুকাটা নদী খুলের দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় কর্মহীন শ্রমিকরা আন্দোলনও করেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে ৫ সদস্যের পূর্ণবেঞ্চ আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য্য করে মঙ্গলবার। উভয়পক্ষের বিজ্ঞ কৌঁসুলিদের যুক্তিতর্কের শুনানী শেষে প্রধান বিচারপতি জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারা বন্দোবস্ত বৈধ বলে ঘোষণা দেন। ফলে আবারও প্রমাণিত হলো অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকার ও বিচারবিভাগ আন্তরিক।
অপরদিকে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের খবর পেয়ে লাখো শ্রমিকের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। স্থানীয় লাউড়গড় গ্রামের শ্রমিক রহিম জানান, দীর্ঘ দুই বছর ধরে আমাদের কাজ নাই। খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। হাইকোর্ট থেকে যাদুকাটা নদীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আমরা খুবই খুশি হয়েছি। আবার আমাদের আয় রোজগারের পথ সুগম হবে। আমরা আর না খেয়ে থাকবো না। যাদুকাটা নদী খুলে দেয়ার জন্য সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
ইজারাদারদের পক্ষে সেলিম আহমদ জানান, সীমান্ত এলাকার মানুষের একমাত্র জীবন-জীবিকার কর্মস্থল হলো যাদুকাটা নদী। লাখো বেকার যুবক-যুবতীর আয় রোজগারের পথ এতোদিন বন্ধ ছিল। দেশের সর্বোচ্চ আদালত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা বিবেচনা করে যুগান্তকারী রায় প্রদান করেছেন। আবারও মুখরিত হয়ে উঠছে যাদুকাটান নদীর লাখো শ্রমিকের পদচারণায়। বন্ধ হবে অবৈধভাবে নদীর পাড়কাটা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, যাদুকাটা নদীর ইজারা বৈধ ঘোষণা করায় লাখো বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।