বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে সরকারি খাদ্যগুদামে বোরোধান বিক্রিতে কৃষকদের সাড়া নেই। গত ২৫ দিনে মাত্র ২ হাজার ৮৩৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। আগামী ১৫ আগস্ট বোরো সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা শেষ হচ্ছে। এবার জেলায় ২৯ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহ করার কথা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার হাওরে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই পুরো ফসল গোলায় তুলেছেন কৃষক। সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে। বাম্পার ফলনের সঙ্গে স্থানীয় বাজারেও ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা দুর্ভোগ সয়ে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন।
জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে এবার বোরো ধানের দাম নির্ধারণ করা ১ হাজার ৮০ টাকা। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এখন ৯০০-৯৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। তাই কৃষকরা খাদ্যগুদামে এসে কষ্ট, দুর্ভোগ ও হয়রানি সয়ে গুদামে ধান দিতে তেমন আগ্রহী নন। তবে গুদামের কাছাকাছি যেসব কৃষক আছেন তাদেরকেই ধান দিতে দেখা গেছে।
শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল দাস বলেন, আমাদের হাওরে এবছর ভালো ধান ফলেছে। সবাই কম বেশি ধান পেয়েছে। এখন বাজারে ৮০০-৯০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করছি। তাই অনেকে খাদ্যগুদামে গিয়ে ধান দিতে আগ্রহী নন। কারণ ধান নিয়ে গেলে ভেজা, চিটাসহ নানা কথা বলে খাদ্যগুদামের লোকজন অতিরিক্ত পরিশ্রম করায়। তাই কৃষকরা সামান্য লাভের জন্য গুদামে গিয়ে ধান দিতে আগ্রহী নয়।
সুনামগঞ্জ কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি শিক্ষাবিদ প্রফেসর চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ধানের দাম বৃদ্ধিসহ ওয়ার্ড পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহের দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের কৃষকদের দাবি না মানায় সরকার বোরো ধান সংগ্রহে কখনো লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনা। নানা জটিলতার কারণে কৃষকরাও গুদামে গিয়ে ধান দিতে আগ্রহী নন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন রেজা বলেন, বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে। আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কৃষক ধান দিতে পারবেন। তিনি বলেন, কৃষকরা যাতে গুদামে এসে ধান দিতে পারেন আমরা তাদেরকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছি।