1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সদর হাসপাতালের দুরবস্থা

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ মে, ২০২১

শামস শামীম ::
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবায় দুরবস্থা অবস্থা বিরাজ করছে। প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম। বিভিন্ন বিভাগের ১২ জন টেকনোলজিস্টের মধ্যে মাত্র ৩ জন কর্মরত আছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে এই হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় এবং ২০০৯ সালে ২৫০ শয্যায় জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত হয়। সরকারিভাবে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালগুলোকে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে বলা হয়। কিন্তু এখানে বিশেষজ্ঞতো দূরের কথা এখনো ৫০ শয্যার অবকাঠামো ও লোকবলেই চলছে হাসপাতালটি। ফলে হাওরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের প্রশাসন বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সনের এপ্রিল মাসে রেডিওলজি বিভাগের প্রধান জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সালেহ আহমদ আলমগীর অবসরে যাওয়ার পর আল্ট্রাসনোগ্রাম ও এক্সরে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করায় আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র এবং সচল এক্সরে যন্ত্রটিও বিকল হয়ে গেছে। ফলে ওই সময় ধরে তালাবদ্ধ আছে রেডিওলজি বিভাগ। বর্তমানে কেবল রক্ত, কফ, ইউরিনসহ সাধারণ কিছু টেস্ট হচ্ছে। এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষজন বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে টেস্ট করাতে হচ্ছে। প্রায় ৫ বছর ধরে এই জরুরি যন্ত্র দুটি বিকল থাকলেও রহস্যজনক কারণে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এই পদে কাউকে পদায়নও করা হচ্ছে না।
জানা গেছে, সম্প্রতি এই হাসপাতালে প্রথম বারের মতো একজন উপপরিচালক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। প্রায় দুই মাস আগে তিনি নিয়োগ নিয়ে আসার পর জরুরি ভিত্তিতে এগুলো চালুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছেন। তাছাড়া বিকল যন্ত্রগুলো সচল করতেও বিশেষজ্ঞ এনে দেখিয়েছেন। এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাম চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৬ বছর ধরে হাসপাতালের অটোক্লেব মেশিন, চার বছর ধরে এনেসথেসিয়া মেশিন, লেপরোস্কোপি সেট ৪ বছর ধরে, ডিজিটাল অটোক্লেব মেশিন ৬ বছর ধরে, এনালগ অটোকিব মেশিন ২ বছর ধরে, সিরাম মেশিন ৫ বছর ধরে, ৫ বছর ধরে এক্সরে মেশিন, ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি ৩ বছর ধরে, ৩টি মাইক্রোস্কোপ যন্ত্র ৫ বছর ধরে, ইনকেবেটর মেশিন ২ বছর ধরে, ৪টি সের্নি সিডেজ মেশিন ৫ বছর ধরে, ৩ বছর ধরে এলইডি এক্সরে মেশিন বন্ধ রয়েছে। ডিজিটাল এই এক্সরে মেশিনটি চালু না করায় নতুন ভবনে নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া হাসপাতালের জরুরি যন্ত্রপাতিগুলো বন্ধ থাকায় হাওরাঞ্চলের সাধারণ মানুষজন বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে গলাকাটা দামে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন টেস্ট করাতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে রেডিওলজিস্ট, প্যাথলজিস্ট, মেডিকেল টেকনলজিস্ট (রেডিওথেরাপি), মেডিকেল টেকনলজিস্ট (ব্ল্যাডব্যাংক), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (হেমাটোলজি) দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। টেকনোলজিস্টের জরুরি পদগুলো শূন্য থাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ সেবাও পাচ্ছেন না রোগীরা।
হাসপাতালের গাইনী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের আফিয়া বেগম বলেন, হাসপাতালে আসার পর আমাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হয়েছে বাইরে। এতে টাকা ও সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আমার স্বামীও হাতের সমস্যা নিয়ে আসলে বাইরে থেকে এক্সরে করাতে হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ ঋণ করে কিছু টাকা নিয়ে এসেছিলাম। বাইরে টেস্ট করিয়ে সব খরচ হয়ে গেছে। এখন ওষুধ কেনার টাকা নেই।
সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, জেলার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার উচ্চপ্রতিষ্ঠান সদর হাসপাতাল। এখানে ডাক্তার-টেকনোলজিস্ট অনেক কিছুই নাই। আমি একজন সাধারণ রোগীকে ভর্তি করিয়েছিলাম। তারা না দেখেই সিলেট রেফার করে দিয়েছিল। এতে গরিব লোকজন চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ বছর ধরে জেলার একমাত্র প্রধান হাসপাতালটিতে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কিভাবে বন্ধ থাকে এটা একটা রহস্য। সচেতন জনগণকে অধিকার আদায়ে মাঠে নামতে হবে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। জরুরি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করছি। কিভাবে দ্রুত এক্সরে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাম চালু করা যায় সেই চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, শুধু টেকনোলজি বিভাগই নয় ৫৯ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ১৬ জন এখন কর্মরত আছেন।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com