স্টাফ রিপোর্টার ::
দিরাই ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে ‘গঠনতন্ত্রবিরোধী’ আখ্যায়িত করে কমিটি বাতিলের দাবিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে আবেদন করেছেন দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল কালাম ও দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদার স্বাক্ষরিত কেন্দ্রে পাঠানো আবেদনপত্র সংবাদকর্মীদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। গত ৬ মে এই দুটি উপজেলায় গঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে গঠনতন্ত্রবিরোধী উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানানো হয়। কমিটিতে জামায়াত-বিএনপির পদবীধারীসহ শাল্লার সংখ্যালঘুদের গ্রামে হামলকারীরাও স্থান পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে দিরাই উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবরে পাঠানো আবেদনপত্রের অনুলিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডনকেও পাঠানো হয়েছে।
আবেদনে দুই উপজেলা সভাপতি উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন স্বাক্ষরিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গত ৬ মে নেতাকর্মীদের না জানিয়ে অগঠনতান্ত্রিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে দিরাইয়ে ২০১৯ সনের ১৭ অক্টোবর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়েছিল। কোন কারণ ছাড়াই সেই কমিটিকে বাতিল না করেই জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান আমেরিকা গমনের আগে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করে গেছেন। কমিটিকে অবৈধ আখ্যায়িত করে তা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদার। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে তাড়ল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুছ মিয়াসহ সম্প্রতি শাল্লা উপজেলার হিন্দুপল্লী নোয়াগাঁওয়ে হামলায় জড়িতরাও স্থান পেয়েছে বলে তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভা করে প্রতিবাদ মিছিলও করেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্যঘোষিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বাতিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ প্রদানের দাবিতে আবেদন জানিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল কালাম। তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।
দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদার বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান আমেরিকা যাওয়ার আগে অগঠনতান্ত্রিকভাবে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে গেছেন। আমি উপজেলা সভাপতি হয়েও জানতে পারিনি। আমাদের উপজেলা কমিটির বেশিরভাগ নেতাকর্মীই কিছু জানেন না। তিনি বলেন, কমিটিতে শুধু বিএনপি নেতাদেরই স্থান হয়নি, শাল্লার হিন্দু গ্রামে বহুল আলোচিত হামলায় জড়িতদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট বলেন, গত ৬ মে ৫টি ও ৭ মে আরেকটি সাংগঠনিক ইউনিটে চুপিসারে ও নেতাকর্মীদের অজ্ঞাতসারে সম্মেলন প্রস্তুতি ঘোষণা করা হয়। আমাদের জেলা কমিটির বেশিরভাগ নেতাকর্মীই এ বিষয়ে কিছু জানেন না। কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনও স্থান পেয়েছেন। তাই দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি কমিটি বাতিলের আবেদন করেছেন। আমরাও এই গঠনতন্ত্রবিরোধী বাতিলের দাবি জানাই।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা কল রিসিভ করেননি।